অবৈধ সন্তান? পিতৃ পরিচয় এর স্বীকৃতির দাবিতে নবজাতক কন্যা সন্তানকে বৃদ্ধ মালিকের বাড়ির সামনে রেখে গেলেন অসহায় মা

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: মালদহ   :: বৃহস্পতিবার ২১,ডিসেম্বর ::   কয়েক মাস আগে অভিযোগ উঠেছিল মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার বিতল গ্রামের এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী তৈমুর রহমান তার পরিচারিকা বুধন বিবির সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন।এই নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত ওই সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই গৃহ পরিচারিকা।
তার কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই ওই পরিচারিকা একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন।ওই মহিলার দাবি সন্তানটি ওই অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীর।কিন্তু ওই কর্মচারী কোন মতেই কন্যা সন্তানকে পিতৃত্বের পরিচয় দিতে নারাজ।আজ বুধবার সকালে ওই অসহায় পরিচারিকা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীর বাড়ির সামনে তার নবজাতক কন্যা সন্তানটিকে ফেলে দিয়ে চলে যায়। আর এই ঘটনা সামনে আসাতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা জুড়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে যায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর বাড়ির সামনে থেকে ওই নবজাতক কন্যা সন্তানকে উদ্ধার করে তারা হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে পাঠিয়েছে বলে খবর।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,ওই বিতল গ্রামের বাসিন্দা নির্যাতিতা মহিলার স্বামী প্রায় দুই বছর ধরে ভিন রাজ্যে কর্মরত ছিল।অভাবের সংসার।দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে এলাকারই এক অবসরপ্রাপ্ত পঞ্চায়েত কর্মী তৈমুর রহমানের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে কোনোরকমে দিন গুজরান করতেন ওই মহিলা।
দারিদ্রতার সুযোগকে হাতিয়ার করে বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও টাকার প্রলোভন দেখিয়ে জোর করে ওই মহিলার সঙ্গে একাধিকবার যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তৈমুর বলে অভিযোগ। এর জেরে সে সময় তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।সে সময় ওই মহিলা তৈমুরকে চাপ দিলে সে মহিলাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে।এমনকি তৈমুরের বাড়ির কয়েকজন সদস্য মহিলাকে জোর করে গর্ভপাত করাতেও নিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
সেখান থেকে মহিলা কোন মতে পালিয়ে আসেন।এর কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই ওই মহিলা এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।এরপর ওই কন্যা সন্তানের পিতৃত্বের স্বীকৃতির জন্য তিনি বারবার তৈমুর এর কাছে আবেদন নিবেদন করলেও তার কোন ফল মেলেনি।
স্বামী শ্বশুরবাড়ি থেকে বিতাড়িত করেছে বলে জানা গিয়েছে।তিনি কয়েক মাস ধরে তার বাপের বাড়িতেই থাকছিলেন।এই অসহায় অবস্থায় আজ ওই মহিলা বাধ্য হয়ে ওই কন্যা সন্তানের বায়োলজিক্যাল ফাদার তৈমুরের বাড়ির সামনে তার সন্তানকে সকালবেলা রেখে দিয়ে আসেন।
ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তে এলাকায় জড়ো হন গ্রামের মানুষেরা।খবর দেওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়।বিশাল পুলিশ বাহিনী ছুটে আসে।এরপর তারা ওই কন্যা সন্তানকে উদ্ধার করে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।বর্তমানে অভিযুক্ত তৈমুর রহমান পলাতক বলে জানা গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − one =