হঠাৎ করে অভিষেকের অভিমান হলো কেন? রাজনৈতিক মহলের খবর হলো, এবারের আসন্ন পশ্চিমবঙ্গের ১০৮টি পৌরসভার নির্বাচনের দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের যাবতীয় নির্বাচন সেই লোকসভা, বিধানসভা এবং স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের দেখভাল করে আসছিল তৃণমূলের নিয়োগ করা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর বা পিকের আইপ্যাক বা ‘ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি’।
তারাই মূলত দলের সঙ্গে আলাপ করে এসব নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। এবারের পৌরসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থী তালিকা তৈরি করেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিয়োজিত আইপ্যাকও নিয়মমাফিক আরেকটি তালিকা প্রস্তুত করে। কিন্তু মমতা স্বীকৃতি দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সীর তালিকাকে। কিন্তু তাঁদের সেই তালিকা প্রকাশ পাওয়ার আগেই আইপ্যাকের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হওয়ায় এটা নিয়ে দলের মধ্যে তীব্র বিরোধ শুরু হয়। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মমতার তালিকা গ্রহণ করার জন্য রাজ্যব্যাপী আন্দোলন শুরু করে তৃণমূল।
আর এই আন্দোলনের মুখে মমতা জানিয়ে দেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সীর তালিকাই তৃণমূলের তালিকা। ওই তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরাই পৌর নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে যোগ্য হবেন। ফলে এই ঘটনা নিয়ে আইপ্যাকের সঙ্গে চরম বিরোধ দেখা দেয়। রাজ্যে এমন খবরও ছড়িয়ে পড়ে, এবার আইপ্যাককে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তাই তৃণমূলের এই দ্বন্দ্বে একদিকে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং অন্যদিকে আইপ্যাক ও অভিষেক। গতকাল অভিষেক তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, তিনি আর চাইছেন না দলের গুরুদায়িত্ব বহন করতে। তবে তিনি মমতার অনুসারী হিসেবে দলের জন্য তাঁর ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে কাজ চালিয়ে যাবেন। অভিষেক আরও বলেছেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি গোয়া বিধানসভার নির্বাচন শেষ হলে ওই দিন বা পরের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তিনি একটি টুইট করে তাঁর বক্তব্য জানাবেন। তবে ওই দিন তিনি কী বলবেন, তা নিয়ে কোনো কথা আসেনি সংবাদমাধ্যমে।