আসানসোল পুরসভার অন্তর্গত কুলটি বোরো অফিসের প্রায় ৮৭ লক্ষ টাকা তছরূপ !!

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: আসানসোল :: রবিবার ২৪,ডিসেম্বর :: আসানসোল পুরসভার অন্তর্গত কুলটি বোরো অফিসের প্রায় ৮৭ লক্ষ টাকা তছরূপের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে কুলটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন পুর সচিব শুভজিৎ বসু । অভিযোগের তদন্ত করে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানার ইনেসপেক্টর ইনচার্জকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন পুরসভার সচিব ।

পুরসচিব অভিযোগ করেন কুলটি বোরো দপ্তরের চুক্তিভিত্তিক পিয়ন এবং চীনাকুড়ির বাসিন্দা সোমনাথ মাহাতো গত ২১ শে ডিসেম্বর ২০২০সালে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৫৬ টাকা পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের দামাগোড়িয়া শাখায় অন্যদিনের মতোই জমা দিতে যান। তারপর থেকে সে নিখোঁজ থাকায় ওই ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই টাকা জমা পড়েনি। তখন ৩ রা জানুয়ারি পুরসভার পক্ষ থেকে কুলটি থানায় ওই অর্থ তছরূপের অভিযোগ দায়ের করা হয় সোমনাথ মাহাতোর নামে।

তারপর বিষয়টি বেশ কিছুদিন চাপা পড়ে যায়। কংগ্রেস কাউন্সিলর গোলাম সরোবরের অভিযোগের ভিত্তিতে আবার তদন্ত শুরু হয় পুরসভার তরফে । তাতেই ধরা পড়ে ১লা এপ্রিল ২০১৫ থেকে ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ৮৬ লক্ষ ৮৬ হাজার ৯৮৯ টাকা পুরসভার ব্যাংক একাউন্টে জমা পড়েনি ।

এরপর সেই কর্মীর আর কোন খোজ মেলেনি এবং প্রায় ৮৭ লক্ষ টাকার কেন কোনও এফ আই আর করা হয়নি বা বিশেষ তদন্ত হয়নি, তা নিয়ে পুরসভার সর্বশেষ বৈঠকে ব্যাপক হইচই করেন গোলাম সরোবর। তিনি পুর সচিবকে লিখিতভাবে একটি চিঠিও দেন। এরই ভিত্তিতে পুর কর্তৃপক্ষ পুরসভার আইনজীবী, ফিন্যান্স অফিসার সহ তিন জনকে নিয়ে একটি কমিটি করে অবিলম্বে এফ আই আর এর নির্দেশ দেয়।

কিভাবে এই তছরুপ হত? সেই সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারীক জানিয়েছেন কুলটি পুরসভার যে রাজস্ব আসতো, তা নিয়মিত ব্যাংকেই জমা দিতে যেতেন চুক্তিভিত্তিক ওই কর্মী। ব্যাংকের বইয়ের স্লিপ এর যে অংশটি ব্যাংকে জমা পড়তো সেখানেই যে টাকা দেখানো হতো আর সেই স্লিপেরই অন্য অংশে তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থাৎ দিনের যতটা আয় হয়েছিল সমস্ত টাকাটা দেখানো হতো ।

ব্যাংকের স্ট্যাম্প ও মারা হত। পুরসভায় ওই স্লিপ ধরেই ক্যাশ রেজিষ্টারে তোলা হত। ফলে পুরসভায় ওই জমা রাখা স্লিপের ভিত্তিতে মনে করা হতো পুরো টাকা জমা পড়ে গেছে। ২০১৫র এপ্রিল থেকে ২০২০র মধ্যে এই আর্থিক কেলেঙ্কারি ঘটেছে। পরে এই নিয়ে ওই বিভাগের একাধিক আধিকারিককে কারণ দর্শানোর জন্য চিঠিও দেওয়া হয়েছিল।

আইন দপ্তরের দায়িত্বে থাকা আইনজীবী সুদীপ্ত ঘটক বলেন, পুরসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল অ্যাকাউন্টস দফতরের আধিকারিকরা এই বিষয়ে আইন আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত করবেন । সেই তদন্তর শেষে মেয়রের অনুমতি নিয়ে কুলটি থানায় বুধবার অভিযোগ দায়ের করেছেন পুর সচিব । মেয়র বিধান উপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ।এবার পুলিশ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − two =