উত্তর ২৪ পরগনা মধ্যমগ্রাম বাদুর দিগবেরিয়ার বিখ্যাত এই দুর্গা পুজো ।

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: মধ্যমগ্রাম :: রবিবার ২২,অক্টোবর :: সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাঁর বাড়ির এই পুজো যখন থেকে শুরু হয়েছিল তখন ছিল অবিভক্ত বাংলা। আর সেই সময় থেকে তাঁর বসতি ছিল বাংলাদেশের বরিশালের গাভা গ্রামে। সেখানেই গভীররাতে স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন তাঁর পরিবারের প্রবীণ সদস্য কালীপ্রসন্ন ঘোষ দস্তিদার।

কথিত রয়েছে , তিনি স্বপ্নে দেখেন রাতে দেবী দুর্গা বাড়িতে এসেছেন। তিনি এসে বলছেন আমার খিদে পেয়েছে আমায় খেতে দে। তখন তিনি বলেন, ‘আমি তো কায়স্থ। আমি কীভাবে তোমায় খেতে দেব, এর জবাবে উমা বলেন, আমি যখন তোকে বলেছি খাবার দিতে, তো দে। এরপর কালীপ্রসন্ন কোনও কিছু না ভেবেই উমাকে স্বপ্নেই জিজ্ঞাসা করেন মা তোমায় কী খেতে দেব’ ।

মার আদেশ ছিল, ঘরের কোণায় দুধ ও চাল রাখা রয়েছে। তা ফুটিয়ে পরমান্ন (পায়েস) করে দে।’ তারপর কালীপ্রসন্ন ঘোষ দস্তিদার স্নান করে চাল ও দুধ ফুটিয়ে চুরু রান্না করে মাকে ভোগ নিবেদন করেন।

তারপর থেকে ঘোষ দস্তিদার পরিবারে দুর্গাপুজো শুরু। সেই থেকে আজও এপার বাংলায় ২৯ প্রজন্মের মধ্যমগ্রামের দিগবেরিয়া গ্রামে চলে আসছে ঘোষ দস্তিদার বাড়ির উমা আরাধনা। এবারে এই পুজো ৩২৯ বর্ষে পদার্পণ করেছে।

এবার পুজোর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ঘোষ দস্তিদার পরিবারের ২৯ তম বংশধররা। এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হল নবমীর ধুনুচি নাচ। পরিবারের সকল সদস্যই এদিন ধুনুচি নাচে অংশগ্রহণ করেন বলেও জানা গিয়েছে। পুরনো রীতি র মেনেই আজও হয়ে আসছে মায়ের এই পুজো।

পুজোতে সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত সবজি বলির প্রথা রয়েছে। এই পরিবারের অন্যতম সদস্য বারাসাত লোকসভার সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও নিজে পুজোতে উপস্থিত থেকে পরিচালনা করেন পুজোর যাবতীয় খুঁটিনাটি। পরিবারের প্রত্যেকেই কমবেশি কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন, তবে পুজোর কদিন সব ব্যস্ততা ভুলে সবাই শামিল হন উমার আরাধনায়।

মাকে ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয় সরু চালের ভাত, এছাড়া গন্ধরাজ লেবু পাঁচ রকমের ভাজা সহ মুগের ডাল আর থাকে চরু। এই খাবার পরিবেশন করা হয় সোনা, রুপো ও কাঁসার থালায়। তবে দশমীতে মার ভোগের জন্য নবমীতেই রাখা হয় পান্তা ভাত ও কচু শাক, সেই খাওয়ার রীতি আজও চলে আসছে দোস্তিদার বাড়ির পুজোয়।

উমাকে বিদায় জানাতে পঞ্জিকার সঠিক তিথি মেনেই দশমীতে হলুদ জল করে বাঙালি রীতি রেওয়াজ মেনে উমাকে বিসর্জন দেওয়া হয়। ব্যস্ততা ভুলে পুজোর কদিন সাংসদকেও আনন্দে মেতে উঠতে দেখা যায়।স্বামী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার সাথে এদিন অঞ্জলি দিতে দেখা যায় সাংসদকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − two =