নিউজ ব্যুরো :: সংবাদ প্রবাহ :: নুয়াদিল্লি :: ১৩টি রাজ্যের ২৯টি বিধানসভা ও ৩টি লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল ভারতের শাসক দল বিজেপির চিন্তা বাড়াল। আগামী বছরের গোড়ায় পাঁচ রাজ্য বিধানসভার ভোটের আগে এই ফল নিশ্চিতভাবেই যেমন তাদের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করবে, তেমনই কিছুটা আশ্বস্ত করবে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে। পাশাপাশি বিজেপিকে নতুন করে ভাবতে হবে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে।
সেখানে চার বিধানসভা কেন্দ্রে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের দাপটে তারা দাঁড়াতে তো পারেইনি, উল্টো প্রাপ্ত ভোটের হার নেমে দাঁড়িয়েছে ১৫ শতাংশের কম। শুধু তা–ই নয়, পশ্চিমবঙ্গে তিনটি কেন্দ্রে বিজেপির জামানত পর্যন্ত জব্দ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্ব নিয়ে এই নির্বাচনী ফল বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল।
বিজেপির পক্ষে হতাশার বড় কারণ হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেসের জয়জয়কার। বিজেপি–শাসিত এই রাজ্যে মান্ডি লোকসভা আসনও কংগ্রেস তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। বাকি তিনটি বিধানসভা আসনেও বিজেপিকে পর্যুদস্ত করেছে শতবর্ষী কংগ্রেস। নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী এই রাজ্যে কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট পৌঁছেছে প্রায় ৪৯ শতাংশে, শাসক বিজেপি পেয়েছে মাত্র ২৮ শতাংশ।
আগামী বছর এই রাজ্যে বিধানসভার ভোট বিজেপির কাছে যে সুখকর হবে না, এই উপনির্বাচন তার স্পষ্ট বার্তা বয়ে আনল। রাজ্যের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর পরাজয় মেনে বলেছেন, জনতার রায় মাথা পেতে নিলাম। বিজেপিতে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী বদলের চিন্তা ঢুকে গেছে।
এই উপনির্বাচনের একটিও আসন ছিল না উত্তর প্রদেশে। কিন্তু দেশের এই বৃহত্তম রাজ্যে বিজেপি যে স্বস্তিতে নেই, তার বড় প্রমাণ মঙ্গলবারই পাওয়া গেল মীরাটে দলের শীর্ষ নেতা সুনীল ভারালার চিঠিতে। উত্তর প্রদেশের লেবার ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের এই চেয়ারম্যান কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী হরদীপ পুরীকে এক চিঠিতে জানিয়েছেন, অবিলম্বে পেট্রল-ডিজেলের দাম না কমালে দলকে মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেছেন, এমনিতেই কৃষি আইন নিয়ে কৃষকের অসন্তোষ তীব্র; তার ওপর নিত্য পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মানুষকে জর্জরিত করছে, অথচ সরকার উদাসীন।
উত্তর প্রদেশে প্রচারে গিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নির্বাচনী জনসভায় বলেছেন, রাজ্য দখল না হলে দিল্লিতে মোদি সরকারের চিন্তা বাড়বে। শাহর এই মন্তব্য বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি উত্তর প্রদেশে বিজেপির হাল নড়বড়ে?