সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: কাকদ্বীপ :: সোমবার ২১,আগস্ট :: ভাইরাল ভিডিওকে কেন্দ্র করে এবার যাদবপুরের ছায়া দেখছে কাকদ্বীপের এক পুত্র হারা দম্পতি। ওই দম্পতির দাবি র্যাগিং এর কারণে মৃত্যু হয়েছে তাদের একমত ছেলের। এমনই দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটেছে কাকদ্বীপ হারুড পয়েন্ট উপকূল থানার অন্তর্গত স্টিমারঘাট রোড এলাকায় ।
ওই এলাকার বাসিন্দা জয়ন্ত ধর ও মৌমিতা ধরের একমাত্র ছেলে ত্রিনাঙ্কুর ধর। কাকদ্বীপ আদর্শ বিদ্যামন্দির স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। গত ১৬ জুলাই আত্মহত্যা করে একাদশ শ্রেণীর ওই ছাত্র । আত্মহত্যার পিছনে কি কারণ ছিল তা পরিবারের লোকজনেরা প্রথমে বুঝে উঠতে পারেননি।
কিন্তু সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হতেই পরিবারের কাছে আত্মহত্যার পিছনে লুকিয়ে থাকা কারণ জলের মতন পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।
ত্রিনাঙ্কুর কাকদ্বীপের একটি কোচিং সেন্টারে পড়তে যেত । ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কোচিং সেন্টারের বেশ কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র ত্রিনাঙ্কুকে র্যাগিং করছে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা যাচাই করিনি আমরা।
পরিবারের লোকজনের দাবী র্যাগিংএর কারণে বেশ কয়েকদিন ধরে মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল ত্রিনাঙ্কুর । অবশেষে এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে সে বাধ্য হয় । তার বাবার দাবী ভাইরাল ভিডিও বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়ার পর ২৭ জুলাই হারুড পয়েন্ট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় । কিন্তু এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকা কেউই এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কোন একটি অজ্ঞাত কারণে সিনিয়র কয়েকজনের পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলছে অপর কয়েকজন সিনিয়া ছাত্র । ত্রিনাঙ্কুর সেই সিনিয়র ছাত্রদের কথা মেনে অন্য সিনিয়র ছাত্রদের পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চাইছে । সম্পূর্ণ ঘটনা ভিডিও করছে অন্য একজন। নিজের ভুল স্বীকারের পর বারবার ভিডিও ডিলিট করে দেওয়ার কথা বলছিল ত্রিনাঙ্কুর।
কিন্তু সেই ভিডিওই কাল হয়ে গেল । সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই অপমানে আত্মঘাতী হল একাদশ শ্রেণীর ওই ছাত্র। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা মৌমিতা ধর । তিনি বলেন , পুলিশ অবিলম্বে তদন্ত শুরু করুক এবং এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক। র্যাগিং এর কারণেই আমার একমাত্র ছেলেকে হারাতে হল।