সুদেষ্ণা মন্ডল/ সজল দাশগুপ্ত :: সংবাদ প্রবাহ :: ব্যুরো নিউজ :: মঙ্গলবার ১৬,জানুয়ারী :: আজ কথাসাহিত্যিক শ। ১৯৩৮ সালের ১৬ জানুয়ারি এই কালজয়ী সাহিত্যিকের মৃত্যু হয়। অনেক গুলি বছর পার হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি আজও পাঠকের কাছে জনপ্রিয় লেখক এবং অপরাজেয় কথাশিল্পী। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের অমর কথাসাহিত্যিক নামেই পরিচিত। জনপ্রিয়তম বাঙালি এই কথা সাহিত্যকের গ্রন্থ বাংলা ভাষা ছাড়াও অনেক ভারতীয় ও বিদেশী ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
শরৎচন্দ্র লেখালেখির প্রেরণা উত্তরাধিকারসূত্রে তার পিতার কাছ থেকে পেয়েছিলেন। যখন তিনি স্কুলের নিচের ক্লাসে পড়তেন সে সময় স্কুলের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি তার পিতার আলমারির দরাজ খুলে গল্পের বই বের করে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তেন। এ সম্পর্কে শরৎচন্দ্র নিজেই বলেছেন- “এবার বাবার আলমারির ভাঙা দরাজ থেকে খুঁজে বের করলাম ‘হরিদাসের গুপ্তকথা’ আর ‘ভবানী পাঠক’ গুরুজনদের দোষ দিতে পারিনে।
স্কুলের পাঠ্য নয়, এগুলো বদ ছেলেদের অপাঠ্য পুস্তক। তাই পড়বার ঠাঁই করে নিতে হলো আমাকে গোয়ালঘরে।” শরৎচন্দ্রের পিতার লেখালেখির অভ্যাস ছিল পুরোদস্তুর কিন্তু তার সব লেখাই ছিল অসমাপ্ত। শরৎচন্দ্র পিতার অসমাপ্ত উপন্যাস, নাটক, গল্প ও কবিতাগুলো প্রায়ই পড়তেন। ওই লেখাগুলোর শেষটা কী হবে কিংবা কী হতে পারে সেটা নিয়ে ভাবতেন।
এ প্রসঙ্গে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভাবতেন এবং সেই সঙ্গে নিজেই কল্পনার জাল বুনতেন। কখনো তিনি সারা রাত না ঘুমিয়ে পার করে দিতেন। পিতার অসমাপ্ত গল্প বা উপন্যাসের শেষ ভাগে কী হতে পারে! কল্পনার সূত্র ধরেই শরৎচন্দ্র সেই ছেলেবেলা থেকে গল্প লিখতে শুরু করেছিলেন।
১৯০৩ সালে রেঙ্গুনে যাওয়ার পূর্বে শরৎচন্দ্র বেশকিছু গল্প, উপন্যাস লিখে সমাজে লেখক খ্যাতি পেয়েছিলেন। তার পাঠকপ্রিয় গল্প উপন্যাসের মধ্যে- ‘বড়দিদি’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘শুভদা’, ‘দেবদাস’, ‘কাশীনাথ’ এবং ‘চরিত্রহীন’র প্রথমাংশ অন্যতম। এক যুগেরও বেশি সময় রেঙ্গুনে অবস্থান করে শরৎচন্দ্র ফিরে আসেন কলকাতায় এবং নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে নিয়োজিত করেন সাহিত্য সাধনায়। এর পরের ইতিহাস আমাদের সবারই জানা। আজ এই কিংবদন্তি সাহিত্যিকের প্রয়াণ দিবসে রইল আমাদের সশ্রদ্ধাঞ্জলি।