নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: কলকাতা :: শুক্রবার ৭,জুন :: সে যুগে সিভিল সার্ভিসে যাওয়া খুব সহজ ছিল না। মহারানী ভিক্টোরিয়া সিভিল সার্ভিসকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত সবার জন্য উন্মুক্ত করলেও রিক্রুটমেন্ট পরীক্ষা হতো শুধু লন্ডনে। তাই মেধা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই অর্থাভাবে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিতে পারেনি।
তার উপর পরীক্ষার সিলেবাসও ছিল একপেশে। ১৮৫৩-তে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস বা আইসিএস সবার জন্যে উন্মুক্ত হলেও প্রথম কোনো ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে উত্তীর্ণ হন তার এক দশক পরে ১৮৬৩-তে। সেই লোকটি হলেন কলকাতার ঠাকুর বাড়ির দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মধ্যম পুত্র সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর পৈতৃকসূত্রে বিশাল জমিদারির উত্তরাধিকারী হলেও তার ঘাড়ে এসে বর্তেছিল পিতা দ্বারকানাথ ঠাকুরের রেখে যাওয়া মোটা অঙ্কের ঋণ। সুদসমেত তখনকার বাজারেই যা এক কোটি টাকা প্রায়! দেবেন্দ্রনাথ ধীরে ধীরে পিতার সব ঋণ শোধ করে আমিষ-রিপু-বিলাসিতা ত্যাগ করে ঋষিব্রত গ্রহণ করলেন।
একনিষ্ঠভাবে আধ্যাত্মিক চর্চায় ও ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হলেন। মহর্ষির প্রভাব তার মেজ পুত্রের উপরে বিশেষভাবে পড়ল। বাল্যকাল থেকেই ধীমান সত্যেন্দ্রনাথকে দেওয়া হয় সংস্কৃত ও আরবির পাঠ। পাশাপাশি চলে ঠাকুরবাড়ির পরম্পরা অনুযায়ী কুস্তি ও ঘোড়দৌড় শিক্ষা। অগ্রজ দ্বিজেন্দ্রনাথ ও গণেন্দ্রনাথের (খুড়তুতো) সাথে তার এ শিক্ষা চলত হরদিন সকালে ঠাকুরবাড়ির আঙিনায়।
সিভিল সার্ভেন্ট ছাড়াও সত্যেন্দ্রনাথের আরো কয়েকটি পরিচয় ছিল। সুরকার, গীতিকার, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। ১৮৬৭ তে দেশাত্মবোধ সঞ্চারের উদ্দেশ্যে আয়োজিত হিন্দুমেলার প্রথম অধিবেশনের সময় তিনি চাকরিসূত্রে পশ্চিম ভারতে অবস্থান করছিলেন বিধায় সেবার অংশ নিতে পারেননি।
পরের বছরের অধিবেশনে অংশ নিয়েছিলেন এবং মেলা উপলক্ষ্যে ‘মিলে সব ভারত সন্তান’ গানটি রচনা করেছিলেন যেটিকে অনেকে ভারতের প্রথম জাতীয় সংগীতের মর্যাদাও দিয়ে থাকে। ১৮৯৭ এ চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন