কারখানা আর নিজেদের রুটি রুজি বাঁচাতে এক অভিনব আন্দোলন শ্রমিকদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: দুর্গাপুর :: রবিবার ১৬,জুলাই :: মেলেনি প্রাপ্য পাওনা গন্ডা, কারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ছিল কারখানার আবার স্বমহিমায় ফিরবে, নামমাত্র টাকায় স্রেফ নিজেদের রুটি রুজির স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছিলেন শ্রমিকরা, কিন্তু মোহোভঙ্গ।

অভিযোগ কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানার যন্ত্রাংশ পার্ট পার্ট করে বিক্রি করে দিচ্ছে রাতের অন্ধকারে। শেষ মেস কর্তৃপক্ষের এই কৌশলী চাল হাতেনাতে ধরে ফেললো শ্রমিকরা। কারখানার যন্ত্রাংশ বোঝাই তিনটি ট্রাক আটকে দিলো এই শ্রমিকরাই। অভিযোগ, তাদেরকে অন্ধকারে রেখে এই তিনটি ট্রাক বেরিয়ে যাচ্ছিলো দিব্বি ।

খবর পেয়েই সাথে সাথে কারখানার গেটের সামনে আটকে দেওয়া হয় যন্ত্রাংশ বোঝাই এই তিনটি ট্রাক। কাজ হারাতে বসা শ্রমিকরা এখন পালি করে রাত পাহারা তো বটেই দিনের আলোতেও রুটি রুজির টানে ঐ তিনটি ট্রাক যাতে ফের বেরিয়ে না পড়ে তার জন্য পাহারাদারের ভূমিকায় অবতীর্ণ।ছবিটা দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার অন্তর্গত লেনিন সরনির শিল্পতালুকের।

সময়টা ছিল ২০২০ সাল। প্রথম করোনাকালে দুর্গাপুরের এই টিএমটি রড প্রস্তুতকারক সংস্থা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে, কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু শ্রমিকদের কারোর কাজ পনেরো বছর কারোর কাজ দশ বছর বাকি, এই অবস্থায় মৌখিক চুক্তির মাধ্যমে ঠিক হয় ২৬ দিন নয় এবার ১৪ দিন কাজ হবে কারখানায়, আর বিনিময়ে পাঁচ হাজার টাকা করে পাবে শ্রমিকরা।

রুটি রুজি বাঁচাতে এই মৌখিক প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যায় শ্রমিকরা। এই করতে করতে বেশ কয়েক বছর কেটে যায়, আচমকা গত মাসের শেষের দিকে একটি নোটিস টাঙিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ, যেখানে কর্তৃপক্ষ বলে কারখানার যন্ত্রাংশ বিক্রি করতে হবে কারণ আর্থিক ক্ষতির বোঝা আরো বাড়ছে।

অভিযোগ, পুলিশের ভয় দেখিয়ে কারখানার যন্ত্রাংশ ভর্তি তিনটি ট্রাককে কারখানার বাইরে বের করে আনতে যায় কর্তৃপক্ষ, আর এখানেই শুরু হয় পাল্টা প্রতিরোধ। শ্রমিকরা একজোট হয়ে এই তিনটি ট্রাক আটকে দেয়, আর বলেন পুলিশ প্রশাসন যা করার করুক কিন্তু কারখানার মাল তারা বিক্রি করতে দেবেন না ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 + ten =