সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: গঙ্গাসাগর :: নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে গঙ্গাসাগর মেলার কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। ইয়াসের প্রভাবে ব্যাপক ভাঙনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল গঙ্গাসাগরের সমুদ্রতটের স্নান করার ঘাট। ইতিমধ্যে সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে সমুদ্রতটের পাঁচটি ঘাট মেরামতের কাজ চালানো হচ্ছে। এরমধ্যে দু’নম্বর রাস্তার স্নান ঘাটটি কংক্রিটের তৈরি করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন, ‘আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলার জন্য মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজিং, ভ্যাকসিনেশন ও মেলা প্রাঙ্গণ লাগোয়া ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো মেরামতের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।’ এমনকি জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় গঙ্গাসাগর এবং বকখালিতে পর্যটনের মানোন্নয়ন সহ সৌন্দ্যর্যায়ন বৃদ্ধিতে গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ মাছের অ্যাকোরিয়াম ও সিভিউ গ্যালারি তৈরীর পাশাপাশি ফুডকোটকে সাজিয়ে তোলা হবে। এছাড়াও মেলা প্রাঙ্গণের পাশেই একটি ১০০ শষ্যার ডরমেটরিতে পর্যটকদের রাত্রিযাপন ও সেখানে পছন্দের খাবার রাখার বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেলার বাইরেও পর্যটকদের কাছে গঙ্গাসাগরকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে এবার একটি অ্যাপ চালু করতে চলেছে গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ। এই অ্যাপে মিলবে গঙ্গাসাগরের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রর লোকেশন ও তার বিবরণ সহ বিভিন্ন বিষয়। এই অ্যাপের মাধ্যমে বকখালিতে আগত পর্যটকরা পর্ষদ পরিচালিত লজে কিংবা কটেজের জন্য বুকিংও করতে পারবেন। হাসপাতাল, খাবারের দোকান, কপিলমুনির মন্দিরে পুজোর সন্ধ্যা আরতির সময়, শাহী স্নান সহ বিশদ তথ্য পাওয়া যাবে এই অ্যাপের মাধ্যমে।
আগামী বছর ১০ থেকে ১৫ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তিতে কয়েক লক্ষ পুর্ণ্যার্থীর সমাগম হবে সাগর দ্বীপের শেষ প্রান্ত গঙ্গাসাগরে কপিলমুনির মন্দির চত্বরে। মুড়িগঙ্গা নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় প্রতিবছর যাত্রী পারাপারে সমস্যা হয়। ফলে দিনের সবসময় ভেসেল চালানো সম্ভব হয় না। প্রতিবছর প্রশাসনের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় পুর্ণ্যার্থীদেরকে নদী পারাপার করানো। তবে প্রশাসন চাইছে এবার মেলা শুরুর আগে মুড়িগঙ্গা নদীতে জমা পলি সরাতে ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ করতে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ড্রেজিং সম্পূর্ণ করা হবে।
মেলার সঙ্গে যুক্ত সহ সাগরদ্বীপের দেড় লক্ষ মানুষের দ্রুত ভ্যাকসিন শেষ করা হবে। মেলার আগে কিভাবে ভাঙন মেরামত করা যায় সে বিষয়ে সেচ দপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ইয়াসের জেরে সাগরতটে ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়েছে। বিশেষকরে ২ নম্বর রাস্তার কংক্রিটের ঢালাই পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছিল। এই রাস্তা ও সমুদ্রতটের স্নানঘাট জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের কাজ চালাচ্ছে সেচ দপ্তর।
মেলার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত দপ্তরের অধিকারিদের সমন্বয় রেখে কাজ করার উপর এবার জোর দেওয়া হয়েছে। গঙ্গাসাগর মেলা মাঠ ও ভাঙন কবলিত জায়গাগুলো পরিদর্শনের পর কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘গঙ্গাসাগর মেলার ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরির কাজ চলছে। রাস্তাঘাট, ভাঙন ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো মেরামত চালাচ্ছে সেচ দপ্তর। মেলার আগেই তা মেরামত করা হবে। মুড়িগঙ্গাতে নদীতে ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। মেলা শুরুর আগে সাগরদ্বীপে খুব শীঘ্রই ১০০ শতাংশ ভ্যাকসিনেশনের কাজ শেষ করা হবে।’