নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: মেদিনীপুর :: শনিবার ১২,অক্টোবর :: বারো মাসে তেরো পার্বন , আর এই পার্বনকে কেন্দ্র করে গ্রাম বাংলায় অসংখ্য লোকগীতি ও লোকনৃত্য ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে। কাঠিনাচ তেমনই একটি অতি প্রাচীন লোকনৃত্য ।
সেই কবে রাজা জমিদারদের লাঠিয়াল বাহিনীর হাত ধরেই কাঠিনাচে র সুত্রপাত। পরবর্তী কালে এক্কেবারে প্রান্তিক মানুষ বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে তা গ্রহণ করেন এবং নিজস্ব রূপ দেন।
জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে র বাউরি-সর্দার জনজাতির লোকেরা পুজোর সময় আজও এই কাঠিনাচের মধ্য দিয়ে বিনোদনে মেতে উঠেন।
কাঠিনাচে ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র বলতে মূলত মাদল। দু’জন মাদল বাদক নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে নাচে যোগদানও করেন। আনুষঙ্গিক বাদ্য হিসেবে থাকে হারমোনিয়াম, কাঁসর, আড়বাঁশি ও করতাল। কেবলমাত্র মেয়েদের সাজে পুরুষরাই এই নাচ নেচে থাকেন।
একদল পুরুষ মেয়েদের শাড়িকে ঘাগরার মতো পরে , মুখে ফেস পাউডার, চোখে কাজল, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, কানে দুল, নাকে নাকছাবি, হাতে কাচের চুড়ি, নকল চুল, চুলের খোঁপায় ফুল, মাথায় মুকুট লাগিয়ে হাতে রং করা ছোট ছোট দু’টি কাঠি নিয়ে দলবদ্ধ ভাবে গানের তালে নাচতে থাকেন ।
আর এক জন মূল গায়েন পুরুষ বেশেই ঘুরে ফিরে নাচতে নাচতে গান ধরেন । ” তারে নারে না রে তারে/ তারে নারে না রে ” সুরে মাদলের দ্রিমি দ্রিমি তালে বাকিরা গোল করে কাঠিতে কাঠি ঠুকে তালে তালে নাচতে থাকেন।
কাঠিনাচ গানের বিষয় মূলত পৌরাণিক কাহিনি নির্ভর রাম বনবাস কৃষ্ণ লীলা ,দাতা কর্ণ , নিমাই সন্যাস। দুর্গা পূজোর অষ্টমী নবমী ও বিজয়া তিন দিন চলে এই কাঠিনাচ।