চাক্কা জ্যামের ডাক দিয়েছিল বিজেপি – সেই প্রতিবাদ কর্মসূচিই প্রাণ কাড়ল ৪ মাসের গর্ভবতী মহিলার

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: ফুলিয়া :: শনিবার ৭,সেপ্টেম্বর :: আর জি কর কাণ্ডে ‘জাস্টিস’ চেয়ে চাক্কা জ্যামের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। সেই প্রতিবাদ কর্মসূচিই প্রাণ কাড়ল ৪ মাসের গর্ভবতী মহিলার । গেরুয়া শিবিরের সমর্থকদের অবরোধের জেরে অসুস্থ মহিলাকে হাসপাতালে আনতে দেরি হয়ে যায়।

শুক্রবার মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ফুলিয়া-রানাঘাটের মাঝে, ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে। মৃতার নাম দুর্গা শীল (২৩)। পদ্ম শিবিরের আন্দোলনে অ্যাম্বুলেন্স আটকে পড়ার জন্যই স্ত্রীকে বাঁচানো যায়নি বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন গর্ভবতী মহিলার স্বামী। চোখের জল মুছে ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘বিজেপির অবরোধের জন্য আমরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এগতেই পারলাম না।

পরিবার সূত্রে খবর কয়েক বছর আগে হীরা শীলের সঙ্গে বিয়ে হয় ফুলিয়ার প্রফুল্লনগরের বাসিন্দা দুর্গার। ফুলিয়ায় একটি ছোটখাট সেলুন রয়েছে হীরার। শুক্রবার সকালে দোকান খোলার জন্য বেরিয়ে যান হীরা । বাড়িতে ভাত রান্নার জন্য চাল পরিষ্কার করছিলেন দুর্গা। পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গার মৃগী রোগ ছিল। এদিন চাল পরিষ্কার করার সময় হঠাৎই পড়ে যান তিনি।

খবর পেয়ে দোকান ফেলে তড়িঘড়ি বাড়িতে চলে আসেন হীরা। চিকিৎসার জন্য টোটো করে স্ত্রীকে নিয়ে যান ফুলিয়া হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে রোগীকে রেফার করা হয় রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে। অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রওনা দেন হীরা ও পরিবারের লোকজন। সেই সময়ে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় চলছিল বিজেপির চাক্কা জ্যাম কর্মসূচি।

আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে অবরোধ করা হয় জাতীয় সড়ক। যার জেরে হবিবপুরের কাছে আটকে পড়ে অ্যাম্বুলেন্সটি। সামনে অনেক গাড়ির লম্বা লাইন। চালকদের কার্যত হাতে-পায়ে ধরতে যান হীরা। লাভ হয়নি। যানজটের জেরে বেরতে পারেনি অ্যাম্বুলেন্স।

আটকে থাকতে হয় প্রায় ১৫ মিনিট। বিষয়টি পুলিসের নজরে এলে পিছনের কিছু গাড়ি সরিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে বার করে দেওয়া হয় অ্যাম্বুলেন্সটিকে। ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালে পৌঁছে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় দুর্গার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × three =