সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: জয়নগর :: প্রাচীন ও বর্ধিষ্ণু শহর জয়নগর। তবে যানজট থেকে শুরু করে পানীয় জল ও নিকাশির যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে এই শহরাঞ্চলে। দেড়শ বছরের বেশি বয়স হয়েছে পুরসভার। এই দীর্ঘ সময়কাল ধরে কংগ্রেসই মূলত পুরসভাকে নিজেদের দখলে রেখেছিল। মাঝে একবার তৃণমূল কংগ্রেস পুরসভার দখল নিলেও গতবার ফের কংগ্রেস এই পুরসভার দখল নেয়। গত কংগ্রেস বোর্ডের আমলে পার্ক থেকে শুরু করে পানীয় জলের রিজার্ভার, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রাস্তা সংস্কার, নিকাশিনালা তৈরি সহ বহু কাজ হলেও এখনও এই পুরসভার মূল সমস্যা যানজট ও নিকাশি। যার ফলে এলাকার সাধারণ মানুষ যথেষ্ট কষ্টে রয়েছেন। ১৪টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত জয়নগর মজিলপুর পুরসভা। এবার ১৪ টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ৯ টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস।
তবে বাকি পাঁচটি ওয়ার্ডে কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী রয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস ১৪ টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিয়েছে। বিজেপি ১৩ টি ওয়ার্ডে ও সিপিএম একটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে।
গতবার ১৪ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬ টি ছিল কংগ্রেসের দখলে। তৃণমূল জিতেছিল ৪ ওয়ার্ডে। অন্যদিকে সিপিএম ১ টা, এসইউসিআই ২ টো ও নির্দল প্রার্থী ১ টি ওয়ার্ডে জয়লাভ করে। নির্দল ও এসইউসিআইকে সাথে নিয়ে বোর্ড গঠন করে কংগ্রেস। তবে পুরসভার শাসনকাল শেষ হতেই সরকার নির্ধারিত পুরপ্রশাসক বসানো হয় এখানে। সেখানে অবশ্য তৃণমূলের লোকজনকেই পুরসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
রাজ্যের সর্বত্র পুরসভাগুলি তৃণমূলের দখলে গেলেও এই পুরসভায় কংগ্রেস নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিল। ফলে এই ১৫২ বছরের পুরসভাকে পুনুরুদ্ধার করতে কোমর বেঁধে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার ১৪ জন বিধায়ক এই পুরসভার ১৪ টি ওয়ার্ডে প্রার্থীদের হয়ে প্রচার শুরু করেছেন।
যে কোন মূল্যে এই পুরসভাকে নিজেদের দখলে নিতে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূলের পুর নির্বাচনের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা, সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি যোগরঞ্জন হালদারের নেতৃত্বে জোর কদমে প্রচার চলছে। থেমে নেই জয়নগর বিধানসভার বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস ও। তিনিও প্রতিদিন দলীয় প্রার্থীদের সাথে নিয়ে প্রচার করছেন।
তৃণমূল জোর কদমে প্রচার করলে এখনও সেভাবে প্রচারে নামেন নি কংগ্রেস, বিজেপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি। রাস্তার মোড়ে মোড়ে, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছোট ছোট পথসভা ছাড়া সেভাবে প্রচারে ঝড় তুলতে দেখা যায়নি তাঁদের। অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচার, জনসভা করতে দেখা গিয়েছে। তৃণমূলের সাথে লড়াই করতে পাঁচটি ওয়ার্ডে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থী ও সিপিএমকে সমর্থন করেছে কংগ্রেস। তাই সেই ওয়ার্ডগুলিতে প্রার্থী না দিয়ে বাকি নটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে তাঁরা।
অনেক হিসেব নিকেশ চলছে। চলছে জোর জল্পনা। তবে শেষ হাসি কে হাসবেন এই পুরসভায় তা নির্ধারিত হবে আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি জনতার রায়ে।