ঝড়বৃষ্টি আর ভরা কোটালের সাঁড়াশি আক্রমণ তার উপর আবার গ্রামে বাঘের আতঙ্কে মানুষজন

সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: সুন্দরবন :: একেই বলে গোদের উপর বিষফোড়া । একদিকে ঘূর্ণিঝড় আর অমাবস্যার ভরা কোটালে জেরবার সুন্দরবনের মানুষজন তার উপরে আবার নতুন করে গ্রামে ছড়িয়েছে দক্ষিণ রায়ের আতঙ্ক । ফলে একরকম সঙ্গীন অবস্থা কুলতলির মৈপিঠের দেবীপুর গ্রামের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার । হওয়া অফিসের বার্তাকে সত্যি করে শনিবার সকাল থেকেই গোটা সুন্দরবন এলাকায় শুরু হয়েছে দুর্যোগ । আর তার দোসর হয়েছে ভরা কোটাল ।

আর এই চরম পরিস্থিতির মধ্যে আবারও রবিবার কুলতলির মৈপিঠের গুড়গুড়িয়া-ভুবনেশ্বরী গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব দেবীপুর গ্রামে ঠাকুরান নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পায় স্থানীয় কিছু মৎস্যজীবি ও এলাকার বাসিন্দারা। আর এর পরেই তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয় গোটা গ্রাম জুড়ে । খবর দেওয়া হয় বনবিভাগ ও মৈপীঠ উপকূল থানায় । খবর পেয়েই তড়িঘড়ি বন বিভাগের রায়দিঘির রেঞ্জার, কুলতলির চিতুরি বিট অফিসার সহ বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ।

গোটা এলাকা জুড়ে চলে তল্লাশি অভিযান । বাঘের পায়ের ছাপ পরীক্ষাও করেন তারা। এ ব্যাপারে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বনবিভাগের এক আধিকারিক বলেন, খবর পাওয়ার পরেই এলাকায় গিয়ে জোরদার তল্লাশি চালানো হয়েছে। কিন্তু বাঘ বেরিয়ে থাকলেও সে সম্ভবত আজমলমারি ১ নম্বর জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের তেমন আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবুও নজরদারি চালাচ্ছে বনকর্মীরা।

কিন্তু এই কথাতে আতঙ্ক দূর হয়নি গ্রামবাসীদের । তাই পালা করে চলছে এলাকায় পাহারার কাজ । উল্লেখ্য গত ৩০ নভেম্বর এই পঞ্চায়েত এলাকারই মনসাতলা গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিল স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। কিছুদিন কাটতে না কাটতেই আবারও নতুন করে ঘটনায় এলাকায় ব্যপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায় রবিবার তন্ময় মহাপাত্র নামে এক বাসিন্দার ঘরের পাশেই কাদা মাটিতে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে।

সকালে পায়ের ছাপ দেখে মনে হয়েছে সুন্দরবনের রাজা আশপাশেই কোথাও ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। বন আধিকারিকরা আশ্বাস দিলেও আতঙ্ক কিন্তু পিছু ছাড়ছে না তাদের। গ্রামবাসীরা জানায় গ্রামে কিছুদিন আগে বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো হয়েছে কিন্তু এখনও আলোর ব্যবস্থা করা হয়নি। তাই বাঘের ভয়কে সঙ্গে নিয়েই রাতের অন্ধকারে প্রহর গুনতে হয় । তাই দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করলে কিছুটা হলেও উপকৃত হবে গোটা গ্রামের মানুষ ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 4 =