ড় গোস্বামী বাড়িতেই প্রায় ৩৫০ বছর ধরে চিরাচরিত নিয়ম মেনে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী কাত্যায়নী।

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: শান্তিপুর :: শুক্রবার ১৩,সেপ্টেম্বর :: নদীয়ার শান্তিপুরের অদ্বৈত আচার্যের বংশধর বড় গোস্বামী বাড়ি, শান্তিপুরের এক অন্যতম তীর্থস্থান। এই বড় গোস্বামী বাড়িতেই প্রায় ৩৫০ বছর ধরে চিরাচরিত নিয়ম মেনে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী কাত্যায়নী। বড় গোস্বামী বাড়ির বর্তমানে চতুর্থতম বংশধর আদ্রিপ গোস্বামী জানান দেবী আরাধনার ইতিহাস ।

জানা গেছে, আজ থেকে ৩৫০ বছর আগে তাদের বাড়ির কুলদেবতা রাধারমন বিগ্রহ হঠাৎ চুরি হয়ে যায়, তারপর থেকেই প্রত্যেক সদস্যর মন ভেঙে পড়ে, কিভাবে রাধারমনকে খুঁজে পাওয়া যাবে তার চিন্তায় প্রহর গোনেন তারা । অবশেষে জানতে পারেন পুরাণ অনুসারে ভাগবত পুরাণে রয়েছে দেবী কাত্যায়নীর ব্রত করলে ইস্ট দেবতাকে পাওয়া যাবে।

সেইমতো বড় গোস্বামী বাড়ির সমস্ত গৃহবধূরা দেবী কাত্যায়নীর ব্রত করতে শুরু করেন। পরবর্তীতে বাড়ির জেষ্ঠ গৃহবধূ স্বপ্নাদেশ পান তাদের রাধারমন নদীয়ার দিগনগরের একটি দীঘিতে পড়ে রয়েছে। তৎক্ষণাৎ বাড়ির সদস্যরা সেই স্থানে ছুটে গিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসে তাদের কুলদেবতা দেবতা রাধারমন বিগ্রহকে । ,

তারপর থেকেই প্রত্যেক বছরই মহাসামরহে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী কাত্যায়নী। যদিও দেবী আরাধনায় রয়েছে বিশেষ নিয়ম।দেবীর ৮টি হাতে কোন অস্ত্র থাকে না, শুধু দুটি হাতে অসুর দমনে থাকে অস্ত্র। দেবীর দুই সন্তান কার্তিক এবং গণেশ থাকে উল্টো দিকে।তার কারণ যেহুতু তারা বৈষ্ণব তাই হিংসের বিরুদ্ধে তাঁদের পুজো।

তবে শক্তি পুজো করতে গেলে শক্তির আরাধনা হয় তবে সেটা তাঁদের নিজস্ব পুঁথিতে।দেবীর ভোগ নিবেদনেও রয়েছে বিশেষ নিয়ম।বৈষ্ণব মতে পূজিত হয় দেবী কাত্যায়নী। মহা ভোগ তৈরি হয় বাড়ির দীক্ষিত গৃহবধূদের দিয়ে।

সকালে হয় বাল্য ভোগ, সপ্তমী অষ্টমী নবমীর এই তিন দিন বিশেষ মহা ভোগ হয় ৩৩ ব্যঞ্জনে। নবমীর দিন সকালে দেবীর কাছে সকলের মঙ্গল কামনা করা হয়, বিশেষভাবে দশমীতে সারা বাড়িতে শান্তির জল ছেটানো হয়। তবে দেবী বিসর্জনে রয়েছে বিশেষ নিয়ম,দশমীর দিন সকালে দেবী বিসর্জন হয় ।

সকলে তড়িঘড়ি বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপর বাড়ির কুলদেবতা রাধারমন কে ভোগ নিবেদন করেন তারা । জানা গেছে যতক্ষণ পর্যন্ত দেবী বিসর্জন না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত রাধারমনকে ভোগ নিবেদন করা হয় না। তবে ৩৫০ বছর ধরে নিষ্ঠা সহকারে দেবী কাত্যায়নির আরাধনা হয়ে আসছে এই শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়িতে। এখন থেকেই তোড়জোড় চলছে দেবীমূর্তি তৈরির । ব্যস্ত রয়েছেন অদ্বৈত আচার্যের বংশধারেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − 11 =