তান্ত্রিক মতে তিনশো বছরের পুরনো কালীপুজো,নেই ঘটস্থাপন,আরতি….

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: বর্ধমান   :: রবিবার ২৭,অক্টোবর :: তান্ত্রিক মতে তিনশো বছরের পুরনো কালীপুজো। প্রতি বছরের মতো এ বারও তাতে মেতেছে নানুরের বঙ্গছত্র গ্রাম। শুধু ওই গ্রামই নয়, এই পুজো উপলক্ষে আশেপাশের একাধিক গ্রামের মানুষজন ব্রতী হন দেবী আরাধনায়। সম্প্রীতির আবহ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও এই পুজার অন্যতম আকর্ষণ।

বঙ্গছত্র সর্বজনীন মহাকালীমাতা পুজো কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, গ্রামের পশ্চিম প্রান্তে উলোসোনা নামে এক পুকুর পাড়ে গিরিলাল চক্রবর্তীর কন্যা চন্দ্রমুখীদেবী এই পুজোর প্রচলন করেন। বোলপুর–পালিতপুর রাস্তার ধারে বর্তমান মন্দিরে পূজিত হন দেবী।

কথিত আছে, গিরিলালবাবুর মেয়ে চন্দ্রমুখীর বিয়ে হয় ন-নগর গ্রামের মুখোপাধ্যায় পরিবারে। বিবাহের এক বছর পরে বিধবা হয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে এসে তিনি মাতৃসাধনায় ব্রতী হন। সিদ্ধিলাভের পরে ওখানেই পুজো শুরু হয়।

মন্দিরের পাণ্ডা শশিকান্ত মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর পরিবার এই পুজোর দায়িত্বে ছিলেন। বছর তিরিশেক আগে শশিকান্তবাবুর ছেলে শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায় বঙ্গছত্র গ্রামবাসীর হাতে পুজোর দায়িত্ব তুলে দেন। লাগোয়া নানুর ও বোলপুর থেকে বহু মানুষ এই পুজো দেখতে আসেন।

পুজো শেষে পর দিন বিসর্জন হলেও, গ্রামে প্রায় চার দিন ধরে চলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বঙ্গছত্র সর্বজনীন মহাকালীমাতা পুজো কমিটির সম্পাদক অমল মণ্ডল জানান, এ বছরও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। লোকসংগীতকে এখানে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

সম্প্রীতি এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের অন্যতম একটি ক্ষেত্র বঙ্গছত্র। নওদা, পালুন্দি, বাসাপাড়া, কুলিয়ার মতো একাধিক সংখ্যালঘু প্রধান গ্রামের বাসিন্দারাও এই পুজোর শরিক হন। কুলিয়ার বাসিন্দা পাঁচু শেখ, শেখ জামাল এবং বাসাপাড়ার বাসিন্দা শেখ হাসিবরা জানান, অনুদান সংগ্রহ থেকে শুরু করে নানা কাজে আজও শরিক হন উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 1 =