সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: গঙ্গাসাগর :: সোমবার ২২,জুলাই :: প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল মৎস্য দপ্তর। কিন্তু আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হতে জীবন জীবিকার টানে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল গঙ্গাসাগরের বেগুয়া খালীর কয়েকজন মৎস্যজীবী। বাঙালির রসনা তৃপ্তি করতে ইলিশের সন্ধানে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেয় মৎস্যজীবী নৌকাগুলি।
মাছ ধরার পর নৌকা গুলি বেগুয়া খালীর বন্দরের দিকে আসছিল । সেই মুহূর্তে পূর্ণিমার কোটালের জোয়ারের জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে সমুদ্র। শুরু হয় উতাল-পাতাল ঢেউ। উত্তাল ঢেউয়ের কারণে তড়িঘড়ি মাছ ভর্তি দুটি নৌকো উপকূলের দিকে আসার চেষ্টা করছিল। একেবারে উপকূলের খুব কাছে চলে আসার পর একটি বিশাল ঢেউ সবকিছু মুহূর্তের মধ্যে তছনছ করে দিল।
ঢেউয়ের তোড়ে উপকূলের কাছে এসে উল্টে গেল দুটি মাছ ভর্তি নৌকা। এরপর মৎস্যজীবীরা চিৎকার করতে থাকে তাদের করুন আর্তনাদ শুনে উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসে স্থানীয় বাসিন্দারা ও অন্যান্য মৎস্যজীবীরা।নিরাপদে সকল মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করা সম্ভব হলেও দুটি নৌকাতে থাকা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কুইন্টাল মাছ কিন্তু উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
কার্যত ৫০ থেকে ৬০ কুইন্টাল ইলিশ মাছের আনুমানিক বাজার মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা। এই বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা দেবব্রত মন্ডল তিনি জানান, পূর্ণিমার কোটালের জেরে নদীতে এমনিতে জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে । কোটালের জেরে উত্তাল হয়ে গিয়েছে সাগর আমরা দেখি উপকূলের কাছে দুটি নৌকো উল্টে গিয়েছে আমরা তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করি।
দুটি নৌকাতে থাকা সকল মৎস্যজীবীরা সুস্থ রয়েছে। স্থানীয় মানুষেরা দড়ি দিয়ে দুটি নৌকাকে টেনে তীরে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু করতে থাকায় বেশিরভাগই মাছ ভেসে চলে গিয়েছে।
অন্যদিকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে ১৭ জন মৎস্যজীবী নিয়ে উল্টে গেল একটি ট্রলার। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় গতকাল অর্থাৎ রবিবার কাকদ্বীপ বন্দর থেকে এফবি মোল্লেশ্বর নামে একটি মাছধরা ট্রলার ১৭ জন মৎস্যজীবী নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছিল।
সোমবার সকাল থেকেই উত্তাল সমুদ্রের কারণে কেদো দ্বীপ থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ নটিক্যাল মাইল দূরে উত্তাল সমুদ্রের কারণে ট্রলারের পাটাতন ফুটো হয়ে যায় এরপর মুহুর্তের মধ্যে মৎস্যজীবী ট্রলারে জল ঢুকতে থাকে।
প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে ট্রলারে থাকা মৎস্যজীবীরা চিৎকার শুরু করে দেয়। মৎস্যজীবীদের চিৎকার শুনে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসে অন্যান্য মৎস্যজীবী ট্রলার। সকল মৎস্যজীবীদের নিরাপদে উদ্ধার করা গেলেও ট্রলার টিকে এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি।