দশমীতে অরন্ধন ,উমাকে কচু শাক ও পান্তা ভাত খাইয়ে বিদায় জানানো হয়

সুদেষ্ণা মন্ডল  :: সংবাদ প্রবাহ :: বারুইপুর :: সোমবার ৯,অক্টোবর :: জমিদারি আজ আর নেই। জমিদারি জৌলুসে ভাটা পড়েনি এখনো পর্যন্ত। বনেদি বাড়ির আনাচে-কানাচে এখন শুধু পুজো পুজো মেজাজ । কোথাও প্রতিমা গড়ার কাজ চলছে,রঙের প্রলেপ পড়ল বলে, কোথাও আবার গোল করে আলোচনায় বসছে বাড়ির মেয়ে-বউরা । পুজো নিয়ে চলছে নানারকম    প্ল্যানিং ।

প্রায় ২৭৪ বছরের পুরনো এই বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোয় এখনও বজায় রয়েছে পুরনো নিয়মকানুন ও ঐতিহ্য । ১১৫৭ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থেকে জমিদার সহস্ররাম বন্দোপাধ্যায় মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকে বারুইপুরের আদি গঙ্গা সংলগ্ন কল্যানপুরের বন্দোপাধ্যায় বাড়িতে বংশ পরম্পরায় দুর্গা পুজো হয়ে আসছে ।দুর্গা মন্দিরে চলছে এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।

পুজোর কয়েকটা দিন মায়ের ভোগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ । সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত মাকে ভোগে নানাপদ মাছ, মাংস ,ডাল, খিচুড়ি সবই দেওয়া হয় । কিন্তু, দশমীর দিন মাকে পান্তা ভাত, কচু শাক দেওয়া হয় । কারণ, দশমীর দিন অরন্ধন হিসেবে পালিত হয়। সে দিন রান্না হয় না । বর্তমানে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির সদস্যরা কেউ থাকেন মুম্বই, কেউ ব্যাঙ্গালোরে আবার কেউ আমেরিকাবাসীও রয়েছেন । তবে, পুজোর সময় কয়েকটা দিন আবার সবাই একসঙ্গে হই হুল্লোড় করেন ।

বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের অন্যতম মহিলা সদস্য কল্পনা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি বলেন, পুজোর কয়েকটা দিন দম খেলার সময় থাকে না। ভোগ রান্না থেকে শুরু করে পুজোর বিভিন্ন কাজে হাত লাগায় পরিবারেরই মহিলারা। পুজোর চারটে দিন খুব আনন্দ করেই কাটাই আমরা।

দশমীর দিন উমাকে প্রাচীন নিয়ম অনুসারে পান্তা ভাত ও কচু শাক খাইয়ে শ্বশুর বাড়ি পাঠানো হয়। এরপর আমরা সিঁদুর খেলাতে মেতে মত্ত হয়ে যাই। ২৭৪ বছর ধরে প্রাচীন রীতিনীতি এখনো বজায় রেখেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের কল্যাণপুরের এই বন্দোপাধ্যায় পরিবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 + 13 =