সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: কুলতলি :: দুষ্প্রাপ্য বিষ্ণু মূর্তি কুলতলী থানায় হেফাজতে থাকার পর অবশেষে জুডিশিয়াল মিউজিয়াম এবং রিসার্চ সেন্টার বিভাগের হাতে তুলে দিল কুলতলী থানার পুলিশ। ২০০৭ সালে তৎকালীন কুলতলী থানার অধীনস্থ মৈপিঠ অঞ্চল, বর্তমানে মৈপিঠ কোষ্ঠাল থানার অধীনে বিনোদপুরের দুই মৎস্যজীবী সুন্দরবনের ডুলি ভাসানিয়া জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে তারা নদীর চড়ে এই মূর্তিটির বেশ কিছু অংশ দেখতে পায় ভাটার সময়।
পরে কোদাল নিয়ে খনন করে মূর্তিটি তুলে আনার খবর লোক মুখে জানা জানি হতেই তৎকালীন কুলতলী থানার পুলিশ মূর্তিটি উদ্ধার করে আনক্লেম প্রপার্টি হিসাবে থানা হেফাজতে রাখে। দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর কেটে যাওয়ার পর মৈপিঠ কোষ্ঠাল থানার নগেনাবাদের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মিদ্দে,সুন্দরবন নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিষয়টি তাঁর নজরে আসে ।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের-সুন্দরবন বিষয়ে গবেষক প্রাচীন মূর্তি ও প্রাচীন বস্তু অনুসন্ধান করতে গিয়ে এই মূর্তি বিষয়ক তথ্যটি সামনে আসে। এই মূর্তি দেখেই ঐতিহাসিক তথা গবেষকরা জানান যে সুন্দরবনে প্রাচীন সভ্যতা ছিল এমনই তার নিদর্শন। রায়দীঘির জটার দেউল, দেউলবাড়ী পুরানো মঠ মন্দির, পুরানো বাড়ির ধ্বংসস্তূপ, তারই প্রমাণ ।
দুষ্প্রাপ্য এই বিষ্ণু মূর্তিটি সুন্দরবনের ধুলিভাশানিয়া দ্বীপে পাওয়া । এই মূর্তিটির সঙ্গে লক্ষ্মী ও সরস্বতী বিরাজমান, আর মূর্তির নিচে গরুড় প্রতিকৃতি আছে। এই মূর্তিটি কুলতলী থানায় সংগ্রহীত আছে আনক্লেম প্রপার্টি হিসাবে। আর এই সময়ে হাইকোর্টে নূতন জুডিশিয়াল মিউজিয়াম এন্ড রিসার্চ সেন্টার নির্মিত হওয়ায় ।নতুন মিউজিয়াম ও রিসার্চ সেন্টারে মূর্তি টিকে সংরক্ষণ করা এবং প্রদর্শন সহ গবেষণা করার জন্য ব্যবহার করা হবে।
হাইকোর্টের জাস্টিস বিপ্লব রায় মহাপরিপালক নেসপাল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। দরখাস্ত করায় এসডিও বারুইপুর এই মূর্তিটি হাইকোর্টের অর্ডার অনুযায়ী কুলতলি থানা থাকা মূর্তিটি দেয়ার ব্যবস্থা করেন। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার জন্য দেরি হয় মূর্তিটি তাদের হাতে তুলে দিতে । দেরি হলেও শেষমেশ কুলতলী থানার পুলিশ এই দুষ্প্রাপ্য পুরাকালের পাথরের মূর্তিটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের হাতে তুলে দেয়