নদিয়ার শান্তিপুর বড় গোস্বামী বাড়ির পূজো আনুমানিক প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো।

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: শান্তিপুর :: শুক্রবার ১৩,অক্টোবর :: শান্তিপুরে ৪০০ বছর ধরে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী কাত্যায়নী। নদিয়ার শান্তিপুর বড় গোস্বামী বাড়ির পূজো আনুমানিক প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো। এই বাড়িতে দেবী কাত্যায়নীর পুজো চলে আসছে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে । এখানে দেবী দুর্গা কাত্যায়নী রূপে পুজিত হন। দেবীর মূর্তিতেও রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

অন্যান্য দুর্গা প্রতিমার চেয়ে দেবী কাত্যায়নী একেবারেই ভিন্ন। এখানে দেবী কাত্যায়নীর দশ হাতের মধ্যে দুটি হাত বড় ,অর্থাৎ এই দুটি হাত দিয়েই সংহারের কথা বোঝানো হয়েছে । কিন্তু বাকি আটটি হাত অনেকটাই ছোট । বড় গোস্বামী বাড়ির সদস্যদের মতে এই পুজো আনুমানিক ৪০০ বছর ধরে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে চলে আসছে বংশ পরম্পরায়। এই পুজোর ইতিহাস সম্বন্ধে জানতে গেলে তারা জানান, একদিন তাদের ইষ্ট দেব রাধারমন হঠাৎ মন্দির থেকে অন্তর্ধান হয়ে যান।

তারপর বাড়ির গৃহকর্তীরা বাড়ির মন্দিরের উঠোনে বসে দেবী কাত্যায়নির ব্রত পালন করতে থাকেন । এরপর তিনদিন পর বাড়ির যিনি জ্যেষ্ঠ কর্ত্রী তাকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন, রাধারমন মূর্তি কোথায় রয়েছে । তারপরেই পাওয়া যায় তাদের ইষ্টদেব রাধারমনের মূর্তি এরপর থেকেই দেবীর পুজো শুরু হয় নদীয়ার শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়িতে ।একেবারেই জৌলুষ হীন এই পুজো । এই পুজোতে সাবেকি মাতৃমূর্তি এবং নিয়ম নিষ্ঠাই একমাত্র অবলম্বন।

দেবী মূর্তির আরেকটি বিশেষ দিক লক্ষ্য করা যায় ,এখানে দেবীর সন্তান কার্তিক এবং গণেশ বিপরীত স্থানে অবস্থান করেন । তবে নবপত্রিকা বসানো হয় সঠিক স্থানেই । অর্থাৎ কার্তিকের পাশে বসে নবপত্রিকা।

কর্মক্ষেত্র কিংবা অন্যান্য কাজে বাড়ির যে সমস্ত সদস্যরা বাড়ির বাইরে থাকেন ,তারা এসে পুজোর ওই পাঁচ দিন দেবী কাত্যায়নির পুজোতে মেতে ওঠে। শুধু তাই নয় নবমীতে দেশবাসী তথা রাজ্যবাসীর জন্য বিশেষ মঙ্গল কামনা করা হয় বড় গোস্বামী বাড়িতে ।দেবীর পুজোতে এলাকার মানুষদের খাওয়ানো হয় ভোগ।

তবে ভোগ রান্নাতেও রয়েছে আকর্ষণ, যে সমস্ত বিবাহিত মহিলারা দীক্ষিত তারাই দেবীকাত্যায়ণীর ভোগ রান্নার কাজে নিযুক্ত হন ,এবং যে সমস্ত মেয়েরা অবিবাহিত তারা দেবীর অন্যান্য পূজার সামগ্রী কাজে নিযুক্ত থাকে। ভক্তি এবং নিষ্ঠার জন্যই অসংখ্য মানুষ ভিড় জমায় শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়ির দেবী কাত্যায়নী পূজোতে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − 13 =