নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: হাওড়া :: বুধবার ২০,আগস্ট :: হাওড়া পুরনিগমের প্রধান প্রশাসক ড. সুজয় চক্রবর্তী তাঁর দায়িত্বকালের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আবারও এক নতুন সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিলেন।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, যারা নিজ গৃহে কুকুর পালন করেন তাঁদেরকে পুরনিগমকে বছরে ১৫০ টাকা কর দিতে হবে। অদূর ভবিষ্যতে বিদেশি পাখি পালকদের উপরও কর আরোপ করা হবে।প্রশ্ন উঠছে, এই কর আদায়ের বিনিময়ে হাওড়া পুরনিগম নাগরিকদের কী দিচ্ছে? নাগরিক সেবার নামে কর তো নেয়া হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে হাওড়ার মানুষকে পুরনিগম যেন নরকযাত্রার জীবন কাটাতে বাধ্য করছে। সড়কের বেহাল দশা, নোংরা-আবর্জনায় ভরা পরিবেশ, ভয়াবহ জলজট, সবই পুরনিগমের চরম ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।
অবৈধ নির্মাণে গোটা পুরনিগম অঞ্চল ভরে গেছে। অবৈধ খাটালের কারণে নালা-নর্দমা আটকে থাকে, রাস্তায় অবাধে ঘুরে বেড়ানো গবাদি পশু ও কুকুরের উৎপাত বাড়ছে। অথচ এদের জন্য কোনো সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা নেই।
কুকুরের টিকাদান, নির্বীজন কিংবা রেবিস প্রতিরোধে পুরনিগমের কোনো উদ্যোগ নেই। অবৈধ খাটাল উচ্ছেদ বা পথচলতি পশুর পুনর্বাসনের দায়ও পুরনিগম নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
বেদনাদায়ক হলো, যারা ঘরে কুকুর পালন করেন, তারা নিজেরাই দায়িত্বশীলভাবে তাদের টিকা দেন, সংক্রমণ থেকে রক্ষা করেন, যত্নে রাখেন; অথচ তাঁদের ওপরই করের বোঝা চাপানো হচ্ছে।
আর যে পথকুকুর কিংবা পশু-গবাদিপশু রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়ে নাগরিকদের সমস্যায় ফেলছে, তাদের জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।
অতএব বলা চলে, পুরনিগমের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই অযৌক্তিক ও অসংগত। নাগরিক সেবার নামে কর আদায় করাই যদি একমাত্র উদ্দেশ্য হয়, তবে তা কেবল নাগরিকদের উপর অন্যায় চাপিয়ে দেওয়া। হাওড়ার মানুষ আজ প্রশ্ন তুলছে, যেখানে সঠিক রাস্তা, নিকাশি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, ও নাগরিক সুবিধা নেই, সেখানে এই করের যৌক্তিকতা কোথায়?