পরিবারের চরম অভাব। বৃদ্ধ অথর্ব পিতা-মাতা। দারিদ্রতার কারণে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে চিকিৎসা করাতে পারছে না।

কুমার মাধব :: মালদা :: সংবাদ প্রবাহ ::  পরিবারের চরম অভাব। বৃদ্ধ অথর্ব পিতা-মাতা। দারিদ্রতার কারণে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে চিকিৎসা করাতে পারছে না। মানসিক ভারসামহীন ছেলের মার মুখী আচরণের কারণে বাধ্য হয়ে শেকলে বেঁধে রাখতে হচ্ছে। পরিবারটির পাশে দেখা মেলেনি কোন জন-প্রতিনিধি থেকে স্থানীয় প্রশাসনিক প্রতিনিধির। নিদারুন কষ্টে রোদে জলে ভিজে ছেলেকে শেকল পড়িয়ে রাখছেন বাবা-মা বাধ্য হয়ে। এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকলো মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা। ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কলম পাড়া গ্রামে। ওই এলাকার বাসিন্দা ভ্যানচালক সনাতন দাসের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সনাতন দাসের স্ত্রী চিনু দাস আবার লোকের বাড়ি বাড়ি ঝি এর কাজ করেন। বড়ো ছেলে ছোটন দাস। ছোট থেকেই দুর্ঘটনার জেরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে। তারপর থেকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার পাগলামিও বেড়ে গিয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দিন চিকিৎসা করানো হয়েছিল কিন্তু সফল হয়নি। এদিকে, দিন আনে দিন খায় পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলের ব্যয়বহুল চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না দরিদ্র ভ্যান চালক পিতা সনাতন দাসের। এদিকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ছেলে ক্রমেই দিনেদিন হিংস্র হয়ে উঠেছে। পাড়ার বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর থেকে লোকজনকে মারধরও করছে।তাই বাধ্য হয়ে পিতা মাতা নিজের সন্তানকে শেকল পরিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতে ছেলের জন্য প্রতিবন্ধী শংসাপত্রের আবেদন করেছিলেন দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের মাধ্যমে। কিন্তু বছর ঘুরতে চলল এখনো মেলেনি সেই সার্টিফিকেট। চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় দরিদ্র সংসারে ছেলের মানসিক চিকিৎসা সম্ভব পর হচ্ছে না। জন-প্রতিনিধি থেকে প্রশাসনিক কর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন ফল হয়নি। পাশে দাঁড়ায় নি কেউই। তাই বাধ্য হয়ে ছেলেকে বেঁধে রাখছেন উঠোনের মধ্যেই জানালেন অসহায় ভ্যান চালক বাবা। এদিকে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছে না অর্থের অভাবে। প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট ও পাইনি। প্রশাসনিক অসহযোগিতার অভাবেই ছেলেটি আস্তে আস্তে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু মুখে পতিত হচ্ছে। এর দায় কে নেবে তার কোন উত্তর নেই প্রশাসনের কাছে। কাটমানি দিলে অনেকদিন আগেই হয়ে যেত প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট তৃণমূলকে তীব্র খোঁচা বিজেপির। অন্যদিকে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে অবিলম্বে ওই ছেলেটিকে প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। আমরা পরিবারটির সঙ্গে দেখা করতে যাব, সব রকম ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে দলের তরফ থেকে। পাশাপাশি প্রশাসনকেও জানাবো আমরা সাফাই তৃণমূল নেতৃত্বের। আর গোটা ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির রাজনৈতিক তরজা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × five =