পশুপালন বিভাগের অধীনে পশুখাদ্য থেকে সাইলেজ বানানোর কর্মশালা

সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: জয়নগর :: সোমবার ২৪,জুলাই :: পশুখাদ্য থেকে সাইলেজ বানানোর প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা জয়নগর ২ নং ব্লকের নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে।এই কেন্দ্রের পশুপালন বিভাগের অধীনে পশুখাদ্য থেকে সাইলেজ বানানোর কর্মশালা হয় ।

সাইলেজ হল সবুজ ও সরস অবস্থায় পশুখাদ্যকে সংরক্ষনের প্রক্রিয়া।সবুজ পশুখাদ্যের স্বাভাবিক পুষ্টিগুণের বিশেষ পরিবর্তন না করে গোটা অবস্থায় বা কুচিয়ে কোন আবদ্ধ জায়গায় যতদূর সম্ভব বায়ুহীন করে চাপ দিয়ে সাইলেজ বানানো হয়। ভালো সাইলেজের রং হালকা সবুজ ও সুমিষ্ট, সামান্য অম্ল স্বাদ যুক্ত এবং ভিনিগারের মতো গন্ধযুক্ত হয়।

ভাল সাইলেজের পি. এইচ. ৩.৫ – ৪.২ এর মধ্যে থাকে। এতে জলীয় ভাগ থাকে ৬০-৭০ শতাংশ।বিভিন্ন শিম্বগোত্রীয় বা শুঁটি জাতীয় ফসল যেমন বারসীম, লুসার্ন, গাইমুগ, বরবটি এবং অশিম্বগোত্রীয় ফসল যেমন ভুট্টা, জোয়ার, হাইব্রিড নেপিয়ার, গিনি ঘাস ইত্যাদি ফসলের সাইলেজ বানানো যায়।

ভুট্টা দিয়ে সাইলেজ বানানো হাতে কলমে দেখানো হলো। পলিথিন দিয়ে সারা বছর এই সাইলেজ বানানো যায়।এ ব্যাপারে নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রাণী পালন বিশেষজ্ঞ ডা:অবধূত দে বলেন,সাইলেজ বানানোর পদ্ধতি হল,সবুজ পশুখাদ্য মাঠ থেকে কেটে এনে ছায়ায় কিছুক্ষন রেখে দেওয়ার পর তা ছোট ছোট করে কুঁচোতে হবে।

ঘাস বা ভুট্টা গাছ গুলিকে ১-২ ইঞ্চি আকারে কেটে নিতে হবে। এর পর প্রতি কুইন্টাল অশিম্বগোত্রীয় ঘাস জাতীয় সবুজ পশুখাদ্যের জন্য ১ কেজি ও শিম্ব গোত্রীয় সবুজ পশু খাদ্যের জন্য ৪ কেজি ঝোলাগুড় ২ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে কুচানো ঘাসের উপর ছিটিয়ে দিতে হবে।

আরো গুনসম্পন্ন সাইলেজ করতে হলে অল্প পরিমান ভিটামিন, খনিজ লবন ও একটু সাধারণ লবন মেশানো উচিৎ। এতে গুনমান যেমন বাড়ে, তেমন সাইলেজের স্বাদ ভালো হয়। সবকটি উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পলিথিনের প্যাকেটের মধ্যে চাপ দিয়ে ভর্তি করতে হবে, যাতে এর মধ্যে একটু ও বাতাস না থাকে।কারণ সাইলেজ তৈরির জন্য বায়ুহীন আবহাওয়ার প্রয়োজন।

এরপরে পলিথিনের প্যাকেটটি বায়ুহীন অবস্থায় ভালো করে এঁটে দিয়ে তাঁর উপর ভারী কিছু চাপিয়ে দিয়ে অন্ধকার ঘরে রেখে দিতে হবে। এক্ষেত্রে কালো পলিথিন বা ত্রিপল দিয়েও করা যেতে পারে। এই অবস্থায় রাখলে তিন মাসের মধ্যে সাইলেজ তৈরি হয়ে যায়।

এটা তৈরি হয়ে গেলে প্রথম কয়েকদিন অল্প অল্প করে সাইলেজ গবাদি পশুকে খেতে দিতে হবে।তারপর অভ্যাস হয়ে গেলে প্রয়োজনীয় পরিমান মতো খাওয়ানো যাবে।এতে গবাদি পশুর স্বাস্থ্যও ভালো হবে দুগ্ধ উৎপাদন ও বৃদ্ধি পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty + six =