নিউজ ডেস্ক :: সংবাদহ :: কোলকাতা :: পশ্চিমবঙ্গে স্বস্তিতে নেই বিজেপি। দলটির বর্তমান অস্বস্তির মূলে রয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও দলবদলের হিড়িক। গত বিধানসভা নির্বাচনে ৭৭ আসনে জয় পায় বিজেপি। দলটির বিধায়ক সংখ্যা কমে এখন ৭০-এ গিয়ে ঠেকেছে। রাজ্য বিজেপিতে এখনো দলত্যাগের হুমকি আছে। রাজ্যে দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে দলটির জনপ্রিয়তা।
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি তাঁকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বসায়। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে যান তিনি। সম্প্রতি রাজীব তৃণমূলে ফিরেছেন। এতে বিজেপির সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের।রাজীব তৃণমূলে ফিরে বলেন, ‘আমি বিজেপিতে গিয়ে ভুল করেছি। মমতা শুধু আমার নয়, গোটা ভারতের নেত্রী।’
নির্বাচনের আগে তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দেন। মুকুল তৃণমূলে ফিরেছেন, শুভেন্দু অবশ্য এখনো বিজেপিতে আছেন। বিধানসভায় তিনি বিরোধীদলীয় নেতা। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি বলেন, ‘এক দিন হয়তো শুভেন্দুও আমাদের পাশে এসে দাঁড়াবেন।’
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা জয় ব্যানার্জি গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখা চিঠিতে জানান, তিনি আজও বিজেপিতে মর্যাদা পাননি। উপেক্ষার পাত্র হয়ে থেকেছেন। তাই এবার বিজেপি ছাড়তে চান।
চলচ্চিত্র অভিনেতা জয় ব্যানার্জি আরও জানান, তৃণমূল থেকে রাজীব বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁকে দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য করা হয়েছিল। কিন্তু সেই রাজীব বিজেপির গালে থাপ্পড় মেরে আবার তৃণমূলে ফিরে গেছেন।
জয় ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গে কয়েকটি নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রতিবারই হেরেছেন। তাঁর স্ত্রী অনন্যা ব্যানার্জি এখন কলকাতা পৌর করপোরেশনের কাউন্সিলর।জয় ব্যানার্জির এমন চিঠির পর তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির সাবেক রাজ্য সভাপতি ও সাবেক কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা।
তিনি বলেন, ‘জয়ের অভিযোগ মেনে নিচ্ছি। জয় যেভাবে কাজ করতে চেয়েছিল, তাঁকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। শুধু জয় নয়, বিজেপিতে আরও বহু নেতা এখন হতাশ ও নিঃসঙ্গ। জয়ের পারিবারিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক হতাশা আছে। সেই হতাশা থেকে তাঁকে মুক্ত করার জন্য বিজেপি কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বরং তাঁকে বিজেপির বাইরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ফলে আজ বিজেপির অন্দরে দল ছাড়ার একটা মনোভাব দেখা যাচ্ছে।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বাড়ছে। এ কারণে দলটিতে বিদ্রোহ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ফলে বাড়ছে দল ছাড়ার হিড়িক। রাজ্যে কমছে বিজেপির জনপ্রিয়তা।