আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: সংবাদ প্রবাহ :: কলকাতা :: শনিবার ২০,সেপ্টেম্বর :: দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতি নতুন মোড় নিল। পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত স্ট্র্যাটেজিক মিউচুয়াল ডিফেন্স অ্যাগ্রিমেন্ট (SMDA) ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, যেকোনো এক দেশকে আক্রমণ মানে অপর দেশের উপরও আক্রমণ বলে গণ্য হবে।
১৭ সেপ্টেম্বর রিয়াধে এই প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “চুক্তির আওতায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনো রাষ্ট্র যদি আগ্রাসন চালায়, সৌদি আরব আমাদের পাশে দাঁড়াবে।” ইঙ্গিত স্পষ্টভাবেই ভারতের দিকে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তান ও সৌদি আরব প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতায় ঘনিষ্ঠ হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চুক্তি শুধু ইসলামাবাদ–রিয়াধ নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে।
তবে প্রশ্ন রয়ে যায়—ভারতের সাথে যুদ্ধ হলে সৌদি আরব কতটা সরাসরি জড়িয়ে পড়বে? বিশ্লেষকদের মতে, চুক্তি সত্ত্বেও রিয়াধ ভারতের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সম্পর্ককে অগ্রাহ্য করতে চাইবে না। ভারতের বাজার সৌদি বিনিয়োগের অন্যতম প্রধান গন্তব্য, পাশাপাশি তেল আমদানি-রপ্তানিতে দু’দেশের পারস্পরিক নির্ভরতা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক কূটনীতিবিদদের একাংশের মত, বাস্তবে সৌদি আরব সরাসরি যুদ্ধে না গিয়ে কূটনৈতিক সমর্থন বা সীমিত সামরিক সহায়তার পথ বেছে নিতে পারে। অপরদিকে পাকিস্তান অবশ্য চুক্তিকে নিজেদের কৌশলগত সাফল্য হিসেবেই দেখাতে চাইছে।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এখনই এই চুক্তির দিকে নজর রাখছে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, উপমহাদেশে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেলে এর প্রভাব শুধু ভারত–পাকিস্তান নয়, গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতায় পড়তে পারে।