পুতিনের নিরাপত্তায় ‘পুপ স্যুটকেস’ রহস্য”

আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: সংবাদ প্রবাহ :: নিউজ ডেস্ক :: মঙ্গলবার ১৯,আগস্ট :: ২০১৭–২০১৯ সালের বিদেশ সফরে ভ্লাদিমির পুতিনের দেহরক্ষীরা তাঁর মল-মূত্র সংগ্রহ করে বিশেষ প্যাকেটে ভরে রাশিয়ায় ফিরিয়ে আনেন—এমন দাবি প্রথম বড় আকারে উঠে আসে ফরাসি সাময়িকী Paris Match-এ।

সেই রিপোর্টের সারসংক্ষেপ উদ্ধৃত করে ২০২২ সালে Business Insider, The Insiderসহ আরও কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম খবরটি প্রকাশ করে। উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়—বিদেশি গোয়েন্দাদের হাতে জৈব-নমুনা (biological samples) না পড়ে যাতে স্বাস্থ্যতথ্য বা ডিএনএ বিশ্লেষণ সম্ভব না হয়।রুশ ফেডারেল প্রোটেকশন সার্ভিস (FSO/FPS)-এর প্রশিক্ষিত নিরাপত্তাকর্মীরা বিদেশ সফরের সময় প্রেসিডেন্টের শৌচাগারে যাওয়ার প্রতিটিবারের পর তাঁর বর্জ্য বিশেষ সিলযুক্ত “পাউচ”-এ ভরে একটি নির্দিষ্ট ব্রিফকেসে (মিডিয়ায় যাকে ‘পুপ স্যুটকেস’ বলা হয়) সংরক্ষণ করেন এবং তা সরাসরি মস্কোয় ফেরত পাঠান।

২০১৭ সালের ফ্রান্স সফর ও ২০১৯ সালের সৌদি আরব সফরে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলেও রিপোর্টে উল্লেখ আছে।

গণমাধ্যমগুলির ব্যাখ্যায়—এটি মূলত “বায়ো-ইন্টেলিজেন্স” ঠেকানোর কৌশল: কারও স্টুল/ইউরিন নমুনা পেলে সম্ভাব্য অসুস্থতা, ওষুধ সেবন, এমনকি জেনেটিক তথ্যের কিছু অংশও অনুমান করা যায়। রাষ্ট্রনেতার ক্ষেত্রে এগুলো রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে সংবেদনশীল বলে বিবেচিত। ২০২২ সালের প্রতিবেদনগুলোও একই যুক্তি দেখিয়েছে।

আগস্ট ২০২৫-এ আলাস্কায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক উপলক্ষে পুতিনের দেহরক্ষীরা ‘পুপ স্যুটকেস’ বহন করেছেন—এমন দাবির খবর ও ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন ভারতে ও আন্তর্জাতিক নানা পোর্টালে ফের শিরোনাম হয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, এসব নতুন প্রতিবেদনও মূলত ২০২২-এর পারি-ম্যাচ/ইনসাইডার সূত্রকে পুনরুল্লেখ করে বর্তমান সফরের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি তুলেছে।

এই প্রটোকল সম্পর্কে রুশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ্য, নথিভুক্ত স্বীকৃতি নেই; সংবাদ নির্ভর দাবি হিসেবেই বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে। তাই একে “রিপোর্টেড প্র‍্যাকটিস”—অর্থাৎ প্রতিবেদনভিত্তিক অভ্যাস—হিসেবে দেখা উচিত।

২০২৫-এর আলাস্কা সফরকে কেন্দ্র করে যে সব খবরে ‘পুপ স্যুটকেস’ উল্লেখ হয়েছে, তার বড় অংশই সেকেন্ডারি/টেরশিয়ারি সূত্র (পূর্বের রিপোর্ট উদ্ধৃত করা) ব্যবহার করেছে; ট্যাবলয়েড বা এগ্রিগেটর সাইটও রয়েছে

জৈব-নমুনা দিয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি/চিকিৎসা-রেজিমেন আন্দাজ করা আধুনিক বায়োমেডিক্যাল ইন্টেলিজেন্সের বাস্তব ঝুঁকি—তাই উচ্চস্তরের রাষ্ট্রনেতাদের ক্ষেত্রে এমন নমুনা “সুরক্ষা” নেওয়া একেবারেই অস্বাভাবিক নয়। ২০২২-এর একাধিক বিশ্লেষণেও এই যুক্তিই সামনে এসেছে। তবে গোপনীয় নিরাপত্তা-পদ্ধতি বলে প্রতিটি ধাপের স্বাধীন যাচাই পাওয়া দুষ্কর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − 13 =