পূর্ব মেদিনীপুরের জুনপুটের জমিদার বাড়ির পুজো

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: কাঁথি :: রবিবার ১৫,অক্টোবর :: পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের দক্ষিণ কাদুয়া গ্রামে মা মঙ্গলচণ্ডী পূজিত হন দুর্গারূপে। তিনশো বছরেরও বেশি প্রাচীন এই পুজোকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ কাদুয়া সহ আশ পাশের এলাকার বাসিন্দা মেতে ওঠেন। দেশপ্রাণ ব্লকে বেশ কয়েকটি শতাধিক বছরের পুরনো বাড়ির পুজোর পাশাপাশি অনেকগুলি সর্বজনীন পুজোও হয়।

জুনপুট সমুদ্রতীরবর্তী দক্ষিণ কাদুয়া এলাকার অধিকাংশ পরিবারই মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের। মা মঙ্গলচণ্ডী তাঁদের আরাধ্যা দেবী। গ্রামের প্রবীণরা জানালেন, তখন এই এলাকা ছিল জঙ্গলময় সমুদ্র উপকূলে জনবসতি ছিল খুবই কম। তৎকালীন এলাকার জমিদার ছিল পাত্র পরিবার।

একদিন জমিদার পঞ্চানন পাত্র স্বপ্নাদেশ পান। তাঁকে মা দুর্গা স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলেন, গ্রামে বেলগাছের তলায় একটি পাথর রয়েছে। শিলাখন্ড স্থাপন করে পুজো শুরু করার আদেশ দেন তিনি। সেই সময়ই সমুদ্রে তিনটি খড়্গ ভেসে আসে। জমিদার পরিবারের- সদস্যরা একটি খড়্গা এই মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরে রাখেন। আজও সেই খড়্গ মন্দিরে সযত্নে রক্ষিত রয়েছে।

বাকি দু’টি খড়্গর মধ্যে একটি দারিয়াপুরের জয়চণ্ডী মন্দিরে এবং আর একটি রয়েছে পশ্চিম বামুনিয়া গ্রামের জানা পরিবারে দুর্গামন্দিরে। পুজোকে কেন্দ্র করে নানা জনশ্রুতি রয়েছে। এমনকী পুজোর সময় এখানকার জঙ্গলে বাঘ আসত বলে লোকমুখে শোনা যায়। শুরুতে এই পুজো জমিদাররা করলেও পরবর্তীকালে পুজো পরিচালনার ভার নেন গ্রামবাসীরা।

বহুকাল ধরে খড়ের চালায় মাটির মন্দিরে পুজো হতো। বর্তমানে পুরনো মন্দির ভেঙে নতুন তৈরি হয়েছে। নিত্যপুজো তো হয়ই। তবে এই ক’টা দিন বিশেষভাবে পুজো পান মা দুর্গা। দেবীকে অলঙ্কার, বেশভূষা দিয়ে নতুন করে সাজানো হয়। জানা যায়, বহুকাল আগে পশুবলি হতো। কালের নিয়মে এখন তা বন্ধ। নবমীর দিনে এখন মায়ের কাছে নানাধরনের স্বব্জি বলি দেওয়া হয়।

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − 3 =