পৃথিবীর মাটি ছুঁলেন সুনীতারা, পাঠানো হল নাসা পুনর্বাসন কেন্দ্রে

কলকাতা ব্যুরো নিউজ :: সংবাদ প্রবাহ :: কলকাতা :: বুধবার ১৯,মার্চ :: অবশেষে পৃথিবীর মাটি ছুঁয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সঙ্গী বুচ উইলমোর ।

এতদিন মহাকাশে থাকার পর পৃথিবীর সঙ্গে নতুন করে নিজেদের সহজাত করে তুলতে তাঁদের বেশ খানিকটা সময় লাগতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। তাই তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ৪৫ দিনের বিশেষ পুনর্বাসন প্রকল্প গ্রহণ করেছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা ।

মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকায় দীর্ঘদিন সেখানে থাকার ফলে শরীরে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তিও দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমতে থাকে ওজন।

পা মাটির সংস্পর্শে দীর্ঘদিন না আসায় পায়ের তলাও শিশুদের পায়ের মতো সংবেদনশীল হয়ে যায়। ফলে পৃথিবীতে ফেরার পর প্রথম কয়েকদিন হাঁটাচলা করতে বেশ বেগ পেতে হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

নানা শারীরিক পরীক্ষা করা হবে সুনীতাদের। সেই কারণে তাঁদের হিউস্টনে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সঙ্গে যাতে তাঁরা আবার সহজাত হয়ে উঠতে পারেন, সেই প্রচেষ্টা করা হবে সেখানে। এখন থেকে সেখানে রোজ দু’ঘণ্টা করে চলবে শারীরিক এবং মানসিক কসরত। আগামী ৪৫ দিন চলবে এই প্রক্রিয়া।

ফ্লোরিডায় এই মুহূর্তে অন্তত ৫২ জন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিকিৎসক-গবেষক তাঁদের চিকিৎসায় ব্যস্ত। এঁদের কেউ কার্ডিওলজিস্ট, কেউ চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ, কেউ রেটিনা বিশেষজ্ঞ, কেউ হরমোন বিশেষজ্ঞ আবার কেউ মাসকুলার অর্থোপেডিকস সার্জন।

“ভরহীন স্পেস স্টেশনে এবং মহাকাশে এতদিন থাকার ফলে সব নতুন করে শিখতে হবে। হাঁটাচলা, খাওয়া দাওয়া, ঘুম- সব খুব সতর্কতার সঙ্গে শিখতে হবে।

কারণ মহাকাশ থেকে মাটিতে পা দিলেই মস্তিষ্কের রক্ত দ্রুত পায়ে নেমে যাবে। ফলে শরীরের ঊর্ধ্বাংশে রক্ত সঞ্চালন কমতে থাকবে। ফলে হাঁটাচলার ভারসাম্য থাকবে না। এলোমেলো পা পড়বে। এতদিন বুকে চাপ ছিল না। ফুসফুসকে আরও জোরে রক্ত সঞ্চালন করতে হবে। ফলে হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দেওয়া স্বাভাবিক।

মনে রাখতে হবে, মাধ্যাকর্ষণে ঢুকে পড়ার পর স্পেস শাটলের বাইরের তাপমাত্রা ছিল ৩ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু ভিতরের তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিক। মজার ব্যাপার হল স্পেস শাটলে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ ধরনের গগলস পরে নিয়েছেন চার মহাকাশচারী।

কিন্তু পৃথিবীর মধ্যে ঢুকে পড়ার পর তীব্র অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবে চোখ তখনই নষ্ট হতে পারে। অথবা পরে রেটিনায় খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মহাকাশে যেভাবে জীবন কাটিয়েছেন অন্তত দেড় মাস সেভাবেই বিশেষজ্ঞদের তদারকিতে থাকতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে হাটতে শেখা, স্বাভাবিক খাবার এবং জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − 6 =