উদয় ঘোষ :: সংবাদ প্রবাহ :: বর্ধমান :: নিজের পৈত্রিক ভিটে বাড়িতে বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে এসে দুষ্কৃতীদের হামলায় নৃশংসভাবে খুন হলেন সব্যসাচী মন্ডল(৩৭) নামে কলকাতার এক প্রতিষ্ঠিত প্লাস্টিক ব্যবসায়ী। ভয়াবহ এই খুনের ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার দারিয়াপুর গ্রামের সব্যসাচী মণ্ডলের আদি বাড়িতে। দুর্ধর্ষ এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতংক ছড়িয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কি কারণে, কারা এই প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে তার ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।
পাশাপাশি মৃত ব্যবসায়ীর সঙ্গে কলকাতা থেকে আসা সব্যসাচী বাবুর এক অবাঙালি বন্ধু রাজবির সিং এই হামলায় জখম হয়েছেন। তাকে ছুরি জাতীয় ধারাল অস্ত্র দিয়ে বুকের ডানদিকে আঘাত করা হয়েছে। সব্যসাচী মন্ডলের গলায়, মুখে, বুকে এবং ডান হাতের কব্জিতে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। আক্রান্তদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
রায়না থানার পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সব্যসাচী মন্ডল, রাজবীর সিং সহ তাদের গাড়ির চালক এবং একজন রাধুনিকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসক সব্যসাচী মণ্ডলকে মৃত ঘোষণা করেন। রাজবীর সিং কে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পাশাপশি গাড়ির চালক এবং রাধুনী কে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে আটক করেছে।
সব্যসাচী মন্ডলের বন্ধু তথা মাছ ব্যবসায়ী রাজবীর সিং জানিয়েছেন, সব্যসাচী বাবু এদিন তার ইনোভা গাড়ি নিয়ে কলকাতা থেকে রায়নার দারিয়াপুরের নিজের আদি বাড়িতে ঘুরতে আসেন। ঘটনার আগে বাড়ির দোতলায় রান্নার কাজ দেখছিলেন সব্যসাচী মন্ডল। তার সঙ্গেই ছিলেন রাজবীর সিং। সেইসময় বাড়ির বাইরে থেকে সব্যসাচী মণ্ডলের গাড়ির চালক দৌড়তে দৌড়তে আসেন, এবং বলেন কয়েকজন সব্যসাচী বাবুকে ডাকছেন। সব্যসাচী মন্ডল নিচে নেমে আসেন। তখনই তিনি গুলির আওয়াজ শুনতে পান।
পাশাপশি তার বন্ধু সব্যসাচী মন্ডলের চিৎকারও শুনতে পান। তিনি যখন উপর থেকে নিচে নেমে আসছেন, দেখেন চারজন দুষ্কৃতী সব্যসাচী মন্ডলের উপর চাকু দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করছে। তিনি জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা গুলিও চালায়। এই অবস্থায় তিনি বন্ধুকে বাঁচাতে গেলে তার উপরেও হামলা চালানো হয়। হামলার ঘটনায় তার বুকের ডানদিকে বেশ কিছুটা অংশ কেটে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় সব্যসাচী বাবু মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
রাজবীর সিং জানিয়েছেন, তিনি প্রথমবার বন্ধুর বাড়িতে ঘুরতে এসেছিলেন। কারা, কি উদ্দেশ্যে সব্যসাচী মন্ডলের উপর আক্রমণ চালালো তা তার জানা নেই। তিনি দুষ্কৃতীদের চেনেনও না। তবে সব্যসাচী বাবুর সঙ্গে বন্ধুত্বের কারণে তিনি অনুমান করছেন, জমি জায়গা বা সম্পত্তিগত বিবাদের কারণেই এই হামলা হয়ে থাকতে পারে। রায়না থানার পুলিশ একটি খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। পাশপাশি গাড়ির চালক, রাধুনী সহ সব্যসাচী মন্ডলের বন্ধু রাজবীর সিংকে আটক করেছে রায়না থানার পুলিশ।