উদয় ঘোষ :: সংবাদ প্রবাহ :: বর্ধমান :: বর্ধমানের মেমারি ১ ব্লকের আমাদপুর গ্রাম। এই গ্রাম কালীক্ষেত্র নামেই পরিচিত। গ্রামে বড়মা, মেজমা,সেজমা কালীর পাশাপাশি রয়েছে আরও অনেক ছোটবড় কালী। গ্রামে নয়নয় করে পঞ্চাশটির উপর কালীপূজা হয়। গ্রামে কালীপূজায় বছরের সেরা উৎসব।
এই গ্রামের কালী পূজার ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। এক একটি কালীর ইতিহাস প্রায় চার থেকে সাড়ে চারশ বছর পুরানো।কথিত আছে, এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বেহুলা নদী। বেহুলার পাশেই ছিল শ্মশান। সেখানেই তন্ত্র সাধনার করতেন কিছু সাধক। এই কালী এসেছে সেই সাধকদের থেকে। সেই সাধকদের ঠাকুর কালক্রমে ব্রাহ্মণদের হয়।
বর্তমানে ঠাকুর পূজা হয় বারোয়ারীভাবে।এখন ঠাকুরের সাজানো ভালো মন্দির হয়েছে। বড়মা মেজমা কালী প্রতিমার উচ্চতাও বিশাল। বড়মার পূজারি শৈলেন ভট্টাচার্য বলেন, শোনা যায় শ্মশানে তালপাতায় এই কালীপূজা হত। তন্ত্রসাধকরা এই পূজা করতেন। সেই থেকে আজও এই পূজা হয় তন্ত্রমতে। বড়মার কালীর সামনে রয়েছে পঞ্চমুন্ডি আসন।
গ্রামবাসীদের একাংশের মতে, মেজমা কালী বড়মার বোন হিসাবে মনে করেন অনেকে। এই পূজাও হয় তন্ত্র মতে। এই পূজার দায়িত্বে থাকা শৈলেনচাঁদ মণ্ডল বলেন, পূজা হয় দুদিনের। অন্যান্য রীতিনীতির সঙ্গে গ্রামের কালীপূজার ভোগ হয় বেশ ভালোভাবে। দেবীর ভোগে থাকে ১৩ রকমের ভাজা, পরমান্ন, রুইমাছ এবং শোল মাছ পোড়া। এই বিশাল আয়োজনে ভোগ নিবেদন করা হয় মা কালীকে।
বড়মা, মেজমা, সেজমা ছাড়াও গ্রামে ৫০ থেকে ৬০টি কালীপূজা হয়।আমাদপুর গ্রামের অলিতে গলিতে বিভিন্ন কালীপূজা হয়। ভাসানের দিন গ্রাম কার্যত লোকে-লোকারণ্য হয়। ভাসানের সময় গভীর রাত পর্যন্ত চলে শোভাযাত্রা। প্রতিমা কাঁধে নিয়ে গ্রাম ঘোরানো হয়। মেমারি, শক্তিগড়, ছাড়াও বর্ধমান এবং অন্যান্য জায়গা থেকেও প্রচুর মানুষ ভাসান দেখতে আসেন। পুলিশ মোতায়েন করতে হয়। সব মিলিয়ে বাঙালীর বড় উৎসব মিটে গেলেও আমাদপুরে বড় উৎসবের জন্য তৈরি হয়।