উদয় ঘোষ :: সংবাদ প্রবাহ :: বর্ধমান :: বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা বাইরের ল্যাবরেটরিতে করানোর জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ সুপারিশ করছেন বলে অভিযোগ। এনিয়ে সরব হয়েছেন রোগীর পরিজনরা। বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য সাদা কাগজে নির্দিষ্ট প্যাথলজিক্যাল ল্যাবের নাম লিখে দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে ও মেডিক্যাল কলেজে নিখরচায় প্যাথলজিক্যাল টেস্টের সুযোগ পান রোগীরা। প্যাথলজিক্যাল টেস্ট করাতে গিয়ে রোগীদের তারিখের পর তারিখ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকী, হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে টেস্ট বন্ধ রয়েছে বলে রোগীদের জানানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগে ভাতার থানার মুরাতিপুরের এক রোগী মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন। তাঁর শরীরে রক্ত কম ছিল। তার রক্তের একটি পরীক্ষা প্রয়োজন ছিল। রোগীর পরিজন খুকুরানি বিবির দাবি, হাসপাতাল থেকেই তাঁকে সংলগ্ন একটি বেসরকারি প্যাথলজি সেন্টারের কাগজ দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে তাঁকে টেস্ট করিয়ে আনতে বলা হয়।
পরে বিভিন্ন লোকজন মারফৎ তিনি জানতে পারেন ওই রক্ত পরীক্ষা হাসপাতালেই হয় এবং তিনি হাসপাতাল থেকেই বিনামূল্যে ওই পরীক্ষা করান। হোয়াটসঅ্যাপ মাধ্যমে রক্ত পরীক্ষা নির্দিষ্ট প্যাথলজি সেন্টারের কাগজটি পাওয়া গেলেও তার সত্যতা যাচাই করা হয়নি।
অন্যদিকে, দিন দু’য়েক আগে আর একটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। গত সোমবার পুরুলিয়া থেকে বর্ধমান হাসপাতালে আসেন মমতা মুর্মু। তাঁর কিডনির সমস্যা ছিল। পরিজনদের দাবি, তাঁদেরও রক্ত পরীক্ষার জন্য খোসবাগানের একটি বেসরকারি প্যাথলজি সেন্টারের ঠিকানা দেওয়া হয়। সেই পরীক্ষাও হাসপাতালেই হয়।
রোগীর পরিজনদের আরও দাবি, প্যাথলজি সেন্টারের সন্ধান ও ঠিকানা দিচ্ছেন হাসপাতালের আয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য কর্মীরা। হাসপাতালের একটি সূত্রের দাবি, কর্মীদের একাংশ মুনাফার লোভে এই চক্র চালাচ্ছেন। ভর্তি রোগী ছাড়াও আউটডোর বিভাগের রোগীদেরও এই ফাঁদে ফেলা হচ্ছে।
ঘটনা নিয়ে সরাসরি অভিযোগ মানছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, আমাদের এই মর্মে কোনও লিখিত অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, রক্ত সহ অন্যান্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নতুন মেশিন বসানো হয়েছে। সমস্ত পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হচ্ছে। রোগীর পরিজনদের অনুরোধ করব, বিভ্রান্ত হবেন না। সমস্যা হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাঁর আরও আশ্বাস, হাসপাতালে কোনও দুষ্টচক্র এই ধরনের কাজ করছে কিনা সেটা আমরা নজরে রাখছি।