বাঁকুড়া :: ষষ্ঠ রাজা ছিলেন রাইচরণ ধবলদেব। প্রত্যক্ষভাবে বিপ্লবী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: বাঁকুড়া :: শনিবার ১২,অক্টোবর :: রাজবাড়ীতে বিপ্লবীদের আস্তানা । প্রাসাদের গুপ্তকক্ষে তৈরি হতো অগ্নিযুগের যোদ্ধাদের অস্ত্রশস্ত্র। বাঁকুড়া অম্বিকানগর রাজবাড়ির দূর্গা পূজা ঘিরে এখনো স্বদেশী আন্দোলনের স্মৃতি ।

৪০০ বছরের পুরানো রাজ্যপাট আজ ধ্বংসস্তূপ। আগাছা জড়ানো ইটের যেটুকু কাঠামো এখনো জীর্ণ রয়েছে অতীতে তা ছিল অম্বিকানগর রাজবাড়ি। কুলদেবী অম্বিকার নামেই নামকরণ হয় অম্বিকানগর। ১৬১১ সালে খড়গেশ্বর ধবলদেব রাজপরিবারে দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন।

ষষ্ঠ রাজা ছিলেন রাইচরণ ধবলদেব। প্রত্যক্ষভাবে বিপ্লবী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
মূলত তাঁর উদ্যোগেই ছেঁদাপাথর এলাকায় একটি সুড়ঙ্গের মধ্যে গড়ে ওঠে বিপ্লবীদের অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। প্রফুল্ল চাকি, বারীন ঘোষ, নরেন গোস্বামী, রুক্মিণী রায়,ভূপেশ দত্ত-সহ ক্ষুদিরাম বসু এসেছিলেন ছেঁদাপাথরে।

বাঁকুড়ার রাইচরণ  ধবল্দেবের রাজবাড়ি –  ছিল বিপ্লবীদের  আনাগোনা :: সংবাদ প্রবাহ

এইসব মহান বিপ্লবীরা অম্বিকানগর রাজবাড়িতেও আসতেন। রাজা নিজে গভীর রাতে ঘোড়ায় চড়ে অস্ত্রশস্ত্র আর রসদ নিয়ে পৌঁছে যেত একেবারে বিপ্লবীদের ডেরায়।

গুপ্তচরের মাধ্যমে রাজার এই বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড জানতে পারে ব্রিটিশ পুলিশ। এর পর তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। আলিপুর বোমা মামলায় কিছু দিন কারাবাসের পর প্রমাণের অভাবে মুক্ত হন রাইচরণ। পুজোতেও অনেক বিপ্লবী এসেছেন পুজো দিয়ে মায়ের নামে শপথ নিয়ে তাদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এই পুজো বিপ্লবীদের পুজো হিসেবে পরিচিত ।

এক সময় আমাদের বিশাল রাজত্ব ছিল। তখন জাঁকজমকপূর্ণ ভাবেই এই পুজো হতো কিন্তু এখন রাজবাড়ির সেই প্রাচুর্য নেই, সরকারী অর্থের পাশাপাশি স্থানীয়দের মানুষের সাহায্য ও রাজপরিবারের সদস্যরা পূজোর খরচ বহন করেন । তোপধ্বনীর মাধ্যমে পূজার নির্ঘন্ট ঘোষণার পাশাপাশি সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত ছাগ বলির প্রথা আজও প্রচলিত “।

বিপ্লবী রাজার এই পুজোর জৌলুস হারিয়েছে তবে নিয়ম নিষ্ঠায় ভাটা পড়ে নি। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বিজড়িত পুজো দেখতে শুধু এলাকার মানুষ নয়, দূরদূরান্ত থেকেও মানুষ ভীড় জমান ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − seven =