নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: মল্লারপুর :: সোমবার ২২,এপ্রিল :: দাবদাহে পুড়ছে বীরভূম সহ রাজ্যের একাধিক জেলা আজ ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ মাত্রা বীরভূমে যা স্বাভাবিকের থেকে ৬ ডিগ্রি বেশি। ঠিক তারই মাঝে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের মল্লারপুরে দেখা গেল সমাজের তৃতীয় লিঙ্গ নামে পরিচিত সেই পরিবারের বিবাহ। মল্লারপুরের বাসিন্দা খুশি বেগম তৃতীয় লিঙ্গ হিজড়াদের মা ।
এক কথায় খুশি বেগমকে বীরভূমের মা নামে চেনে সকলেই। জানা যায় এই খুশি বেগম আজ থেকে ১৮ বছর আগে একটি শিশু কন্যাকে দত্তক নিয়েছিলেন। সেই মেয়েটিকে প্রশাসনিক পরামর্শে লালন- পালনের দায়িত্ব তিনি নিয়েছিলেন কর্তব্যের সাথে পালন করেছেন। দীর্ঘ ১৮ বছর মেয়েটিকে যত্ন সহকারে খাওয়া- দাওয়া পড়াশোনা সমস্ত দায়িত্ব পালন করেন।
খুশি বেগম তার মেয়ের নাম রাখে সাবানা খাতুন এছাড়াও তিনি আরেকটি ছেলের দায়িত্ব নিয়েছেন ।মেয়ে শাবানা খাতুন কে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করান এবং অবশেষে এলাকার চার পাঁচশো লোক এর উপস্থিতিতে তার বিবাহ দেন।
খুশি বেগম জানান মেয়েকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়িয়েছি তার বিয়ের জন্য একটা ভালো ছেলে দরকার ছিল তাই কোম্পানিতে কাজ করা একটি ভালো ছেলে সন্ধান পেয়েছিলাম । ছেলের বাড়ি বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামে। আজ যতটা সম্ভব এলাকার মানুষের সহযোগিতায় মেয়ের বিয়ে দিলাম তাদের বিবাহিত জীবন সুখের হোক এই কামনা করি।
এই খুশি বেগমের মতো তৃতীয় লিঙ্গ দের সমাজে তাদেরকে বলে নাকি তারা মা হতে পারবে না। শুধু নিজের গর্ভে ধরা ছেলে মেয়ে থাকলে মা-বাবা হওয়া যায় সেটা নয়। আজকে তার প্রমাণ দিলেন তৃতীয় লিঙ্গ খুশি বেগম।
প্রতিবেশীদের বক্তব্য এই খুশি বেগমরা ১০-১২ জন একটা বাড়িতে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করছে মল্লারপুরে। তাদেরকে দেখে সমাজের অনেক মানুষ অনেক কথা বলে । তারা খুব কষ্ট করে প্রতিটা বাড়িতে, ট্রেনে ,বাসে আবার কখনো রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা তোলে এবং এই টাকা দিয়ে বিভিন্ন সমাজসেবার কাজে খরচ করেন শুনেছিলাম কিন্তু আজ প্রমাণ চোখে দেখলাম ।
৬-৭ লক্ষ টাকা খরচ করে যে দত্তক নেওয়া মেয়ের বিয়ে দিচ্ছে এবং ৪০০ থেকে ৫০০ লোককে খাওয়া দাওয়া করাচ্ছে এটা সমাজের একটা বিশাল শিক্ষা।