আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: সংবাদ প্রবাহ :: কাঠমান্ডু :: শুক্রবার ১২,সেপ্টেম্বর :: নেপাল রাজনৈতিক ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজই শপথ নিচ্ছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। প্রেসিডেন্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
অশান্তির মাঝে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত
সাম্প্রতিক সময়ে নেপালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, সহিংসতা ও দুর্নীতির অভিযোগে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে। সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কার্কিকে মনোনীত করা হয়। তাঁর নেতৃত্বে শান্তি ও সুশাসনের নতুন সূচনা হবে বলে আশা করছেন অনেকে।দৃঢ়তার প্রতীক সুশীলা কার্কি
৭২ বছর বয়সী কার্কি নেপালের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দুর্নীতি দমনে কঠোর অবস্থানের জন্য সুপরিচিত। বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ রায় দেওয়ার সাহসিকতায় তিনি সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা ও সুনামই এবার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ নির্বাহী পদে নিয়ে এসেছে।
চ্যালেঞ্জে ভরা দায়িত্ব
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কার্কির প্রথম দায়িত্ব হবে— চলমান সহিংসতা ও অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণ করা – দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ জোরদার করা – নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ
তবে সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করার জন্যও তাঁর ওপর বাড়তি চাপ থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনতার প্রত্যাশা
কাঠমান্ডুসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মহিলারা এই অভূতপূর্ব সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। রাস্তায় নেমে অনেকেই বলেছেন, নেপালের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি এক “নতুন ভোর”। সাধারণ মানুষের আশা, কার্কি নারী নেতৃত্বের শক্তি ও সততার প্রতীক হয়ে উঠবেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ভারত, চীনসহ প্রতিবেশী দেশগুলো নেপালের এই সিদ্ধান্তের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে। কূটনৈতিক মহলের মতে, একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার নেপালের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে।
ইতিহাসের পাতায় নাম লিখে আজ শপথ নেবেন সুশীলা কার্কি। একদিকে মহিলাদের জন্য গর্বের মুহূর্ত, অন্যদিকে অশান্ত নেপালের জন্য এক বড় পরীক্ষা— এই দ্বন্দ্বের মাঝেই শুরু হচ্ছে তাঁর নতুন দায়িত্বপথ।