নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: ঝাড়গ্রাম :: বৃহস্পতিবার ৪,জুলাই :: বেলিয়াবেড়া রাজপরিবারের ইতিহাস নিয়ে প্রকাশিত হলো তথ্যচিত্র।একসময় এই রাজবাড়ী থেকে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের খাজনা আদায় হতো। কয়েকশো বছর ধরে রাজত্ব করেছিলেন এই বংশের জমিদারেরা। তখনকার দিনে জমিদারদের রাজা বলা হতো।
শিক্ষা, সাহিত্য, ব্যাঙ্ক ও স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রহরাজ বাড়ির ভূমিকা অনস্বীকার্য। বৃহত্তর এই জমিদার পরিবার ‘রাজ পরিবার’ নামেই পরিচিত হয়েছিলেন। রাজবাড়ীর ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে বর্তমান রাজবাড়ীর আনাচে কানাচে। এক প্রহরে ঘোড়া ছুটিয়ে যতটা এলাকা দখল করা যাবে, ততটা এলাকার খাজনা আদায় ও তদারকির দায়িত্ব পাবে এই পরিবার। সেই থেকে ‘প্রহরাজ’ উপাধি লাভ।
প্রতিষ্ঠাতা নিমাই চাঁদ মহাপাত্র প্রথম দিকে মাটির বাড়িতে থেকেই শাসন করেছিলেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রহরাজ মহাপাত্রের সময়কালে শিক্ষার বিকাশ ঘটেছিল। পার্শ্ববর্তী ডুলুং নদীর তীরে অবস্থিত ব্যাঘ্রেশ্বর মন্দির এই পরিবারের রাজত্ব কালে নির্মাণ করা হয়েছিল। রাজ পরিবারের অন্দরে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের মন্দির।
বর্তমানে শাসন না থাকলেও, পরিবারের থেকে প্রতিবছর জন্মাষ্টমী , রাধাষ্টমী, রাস পূর্ণিমা, রথযাত্রা, দুর্গোৎসবের মতো নানান সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বর্তমান ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়া থানার অন্তর্গত বেলিয়াবেড়া বাজারেই রয়েছে এই প্রহরাজ রাজবাড়ী। প্রাচীন স্থাপত্য হিসেবে সিংহদ্বার, চুনসুরকির তৈরি প্রাসাদোপম রাজপ্রাসাদ, মন্দির, দুর্গা দালান, রথ ও তৎকালীন সময়ে ব্যবহৃত রাজার অস্ত্র, আসবাবপত্র, গান বাজনার নানান সরঞ্জাম এখনও রয়েছে।
আর এই রাজবাড়ীর ইতিহাস নিয়ে প্রথম কোনও তথ্যচিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নিলেন মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা তথ্যচিত্র লেখক নিসর্গ নির্যাস মাহাতো ও খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা পরিচালক সুনীল বিশ্বাস। ওনাদেরকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন বেলিয়াবেড়া কৃষ্ণচন্দ্র মেমোরিয়াল হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ‘শিক্ষারত্ন’ সুব্রত মহাপাত্র।
তথ্যচিত্রে অভিনয় করেছেন প্রহরাজ পরিবারের সদস্য সদস্যা- রণজিৎ নারায়ণ দাস প্রহরাজ মহাপাত্র, সুরজিৎ নারায়ণ দাস প্রহরাজ মহাপাত্র, সোমা আচার্য, বিশ্বজিৎ দাস প্রহরাজ মহাপাত্র, রাজবাড়ির পুরোহিত বিদ্যুৎ ঘোষাল। এছাড়াও অভিনয় করেছেন শিক্ষক সুব্রত মহাপাত্র, নরসিংহ দাস, বিউটিশিয়ান রঞ্জিতা বিশ্বাস। স্ক্রিপ্ট লিখেছেন নিসর্গ নির্যাস মাহাতো। স্বল্পদৈর্ঘ্যর এই তথ্যচিত্রে রাজপরিবারের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
সম্প্রতি রাজ পরিবারের বৈঠকখানায় এই তথ্যচিত্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি লাভ করে।