বিদেশ ডেস্ক :: সংবাদ প্রবাহ :: নয়াদিল্লি :: রাজসম্মান, আভিজাত্য, জৌলুস সব পায়ে ঠেলে দিয়ে অবশেষে ভালোবাসার মানুষকেই জীবনসঙ্গী করলেন জাপানের রাজকুমারী মাকো। জাপানের রাজতন্ত্রের নিয়মানুযায়ী এ কারণে তাকে রাজকীয় মর্যাদা ত্যাগ করতে হলো। মাকো বিয়ে করলেন কলেজজীবনের ভালোবাসার মানুষ কেই কোমুরোকে। খবর এনডিটিভির।
কলেজজীবনের বন্ধু মাকো ও কোমুরো উভয়ের বয়স বর্তমানে ৩০। চার বছর আগে তারা বাগদানের ঘোষণা করেন । এর পর ২০১৮ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য কোমুরো জাপান ছেড়ে নিউইয়র্কে যান। গত সেপ্টেম্বরে তিনি দেশে ফিরেন। এর পর তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। মঙ্গলবার তারা বিয়ে সম্পন্ন করেন।
জাপানে রাজকীয় বিয়ের ক্ষেত্রে যেসব আনুষ্ঠানিকতা অনুসরণ করা হয়, সেগুলোও পরিহার করেছেন মাকো। জাপানের আইন অনুসারে রাজপরিবারের কোনো নারী সদস্য যদি বাইরের কোনো সাধারণ পুরুষকে বিয়ে করেন, তবে তিনি রাজকীয় মর্যাদা হারান। তবে পুরুষ সদস্যের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য নয়।
মাকোর নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকে প্রেমিককে বিয়ে করে রাজপদবি হারালেন। রাজপরিবারের ঐতিহ্য অনুযায়ী, রাজপদবি হারানোয় ১৩ লাখ মার্কিন ডলার পাওয়ার কথা মাকোর। কিন্তু তিনি এই পারিবারিক অর্থ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ফলে জাপানি রাজপরিবারের তিনিই একমাত্র সদস্য, যিনি পদপদবি-অর্থ ত্যাগসহ পুরোপুরি রাজকীয় সম্পর্ক ছিন্ন করলেন।
টেলিভিশন ফুটেজে দেখে গেছে, বাড়ির গেটের সামনে বিয়ের পোশাক ও গহনা পরে আছেন মাকো। বিয়ের পর বাবা-মা ও ২৬ বছর বয়সি বোন কাকোকে বিদায় জানাচ্ছেন। পরিবারের কাছ থেকে পৃথক হওয়ার সময় মাকোকে তার বোন জড়িয়ে ধরে চুমু খায়।
আজ বিকালেই নবদম্পতি এক সংবাদ সম্মেলন করে রাজপরিবার ত্যাগের ঘোষণা করবেন। এই সংবাদ সম্মেলনে তারা সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দেবেন। এ ছাড়া আগে থেকে জমা নেওয়া প্রশ্নের মধ্যে পাঁচটি নির্বাচিত প্রশ্নের লিখিত উত্তর দেবেন তারা।কয়েক বছর ধরে এই জুটির প্রেম-ভালোবাসা-বিয়ের বিষয়টি জাপানের গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পেয়ে আসছে। এ কারণে রাজকুমারী মাকো এক ধরনের মানসিক বৈকল্যে ভুগছেন।
বিয়ের পর মাকো ও কোমুরো দম্পতি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাবেন বলে জানা গেছে। কোমুরো একজন আইনজীবী। তিনি আইনজীবী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করেন।ভালোবাসার মানুষ কোমুরোকে বিয়ের জন্য রাজকীয় মর্যাদা ছাড়ার ঘোষণা আগেই করে ছিলেন মাকো। বহুল আলোচিত এ বিয়ের আগে গত শনিবার মাকো রাজকুমারী হিসেবে শেষ জন্মদিন উদযাপন করেন।