নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: চুঁচুড়া :: রবিবার ৬,জুলাই :: মহরমের পবিত্রতা ও শোক-আবেগে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। নবমীর রাত অর্থাৎ মহরমের আগের দিন রাতে ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া বের হয় ইমামবাড়ী থেকে, আর সেই শোকযাত্রা পৌঁছায় পিপুলপাতি মোড় পর্যন্ত। শহরজুড়ে তখন আবেগ, ধর্মীয় ভক্তি ও ঐতিহাসিক চেতনার এক অনন্য সংমিশ্রণ।রাত নামতেই আলোকসজ্জায় আলোকিত হয়ে ওঠে ইমামবাড়ি। সাদা-কালো পতাকা, কালী কাফনের প্রতীক, শোক চিহ্ন—সব কিছু দিয়ে সাজানো হয় তাজিয়া। তাজিয়ার চারপাশ ঘিরে থাকেন শোকপালনকারীরা। দোয়ান, মর্সিয়া ও নওহা পাঠ করতে করতে শুরু হয় মাতম। কেউ বুক চাপড়াচ্ছেন, কেউ “হায় হোসেন! হায় আব্বাস!” ধ্বনিতে শোক প্রকাশ করছেন।
প্রতিবছরের মতো এবারও ইমামবাড়ি থেকে সন্ধ্যার পর শুরু হয় তাজিয়া মিছিল। রাস্তায় পা ফেলতেই মানুষের ঢল নামে। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে বহু মানুষ সেই মিছিলে সামিল হন। নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ—সবাই উপস্থিত এই শোকস্মরণে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে, পুলিশের কঠোর নজরদারিতে এগিয়ে চলে মিছিল।
রাস্তাজুড়ে মাদার, কুলফি, শরবত ও লজেন্সের অস্থায়ী দোকান দেখা যায়, কিন্তু সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকে তাজিয়ার গম্ভীর সৌন্দর্য ও শোকপ্রকাশ। কিছু জায়গায় কাফেলা থেমে থেমে “জঞ্জির মাতম” বা চেইন দিয়ে পিঠে আঘাত করার দৃশ্যও দেখা যায়, যা হুসাইন ও কারবালার শহীদদের স্মরণ করে করা হয়।
পিপুলপাতি মোড়ে পৌঁছেই শেষ হয় তাজিয়া যাত্রার এক ধাপ, কিন্তু শোকের আবেগ তখনও ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। লোকজন তাজিয়াকে কেন্দ্র করে প্রার্থনা করে, ফাতেহা পড়ে, এবং শোকবার্তা আদান-প্রদান করে।