সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: সুন্দরবন :: বাঘের মুখে পড়েছে সঙ্গী। দেখে বুক কেঁপে ওঠেনি তার। বরং লাঠি নিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছে নিজে । লাফিয়ে পড়েছে বাঘের ওপর । তারও শরীরের একাধিক জায়গায় বাঘের নখের আঁচড় । বাঘের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই করে শেষমেশ সঙ্গীকে রীতিমতো মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এলো আরেক সঙ্গী ।
সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় জখম দুই কাঁকড়া শিকারি। সুন্দরবনের ঝিলার জঙ্গল লাগোয়া নদীর খাঁড়িতে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে রীতিমতো বাঘের সঙ্গে লড়াই করে সঙ্গীকে উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থাতেই গ্রামের বাড়িতে ফিরল ওই দুই ব্যক্তি। বাসন্তী ব্লকের ঝড়খালি উপকূল থানা এলাকার ঝড়খালি তিন নম্বর গ্রামের বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা মিহির সর্দার ও বাবলু হালদার । তারা নৌকা নিয়ে কাঁকড়া ধরার জন্য রওনা দিয়েছিল সুন্দরবনের নদীর খাঁড়িতে ।
খাঁড়িতে কাঁকড়া ধারার সময় সন্ধ্যায় একটি বাঘ লাফিয়ে পড়ে মিহিরের ঘাড়ের ওপর । তার মাথায় মুখে কামড় বসিয়ে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে । সেই অবস্থায় হাতের কাছে কোন কিছুই পাননি বাবলু ।অবশেষে লাঠি নিয়ে লাফিয়ে বাঘকে পিছন থেকে চেপে ধরার চেষ্টা করে।
বাঘের মুখ থেকে মিহিরকে ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করতে থাকে । বাধা পেয়ে বাঘটি মিহিরকে ছেড়ে দেয়। এরপর পিছন ঘুরে বাবলুর ওপর থাবা বসায়।এরপর লাঠি দিয়ে বাঘটিকে আঘাত করতে থাকেন দুজনে। প্রতিরোধ গড়ে তুললে বেগতিক বুঝে জঙ্গলে পালিয়ে যায় বাঘটি l
রক্তাক্ত অবস্থাতেই বাবলু মিহিরকে নিয়ে নৌকায় গ্রামে ফেরে । গ্রামবাসীরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় মিহির সর্দারকে প্রথমে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় l তারপর সেখান থেকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় l তার একটি চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানায় । বাবলু হালদারকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় ।