মার্কিন দুতাবাস ঘেরাও ঘিরে উত্তাল মুরিদকেত — পুলিশের গুলিতে নিহত ১৩, আহত দেড়শোরও বেশি

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: নিউজ ডেকে (লাহোর) :: সোমবার ১৩,অক্টোবর :: পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুরিদকেতে রবিবার বিকেলে বিক্ষোভ রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইসলামাবাদ দূতাবাস ঘেরাওয়ের ডাক ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে, যার জেরে মুরিদকেত শহরে ব্যাপক সহিংসতা দেখা দেয়।

পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৩ জনের, আহত দেড়শোরও বেশি মানুষ। ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন প্রশাসনের সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য নীতির প্রতিবাদে কয়েকটি ইসলামপন্থী সংগঠন “আমেরিকা বিরোধী মার্চ”-এর ডাক দেয়।

রাজধানী ইসলামাবাদের দিকে রওনা দেয় বিক্ষোভকারীদের বিশাল মিছিল। পথে পাঞ্জাবের মুরিদকেত এলাকায় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে।

পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে সরকারি ভবন ও পুলিশের গাড়িতে হামলা চালায়, ইট-পাটকেল ছোঁড়ে এবং টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। আত্মরক্ষার্থে প্রথমে কাঁদানে গ্যাস, পরে জলকামান এবং শেষে গুলি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ।

তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলেন, হঠাৎই পুলিশ বিনা উসকানিতে গুলি চালায়। নিহতদের মধ্যে দুই কিশোর এবং এক কলেজ ছাত্রও রয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ।

আহতদের মধ্যে বহুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের লাহোরের মায়ো হাসপাতাল ও স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। মুরিদকেত ও আশপাশের এলাকায় জারি হয়েছে কারফিউ; সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে।

পাঞ্জাব প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং নিহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে ইসলামপন্থী সংগঠনগুলির হুঁশিয়ারি— “যতক্ষণ পর্যন্ত মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভের অনুমতি না দেওয়া হবে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কট ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা এই প্রতিবাদকে আরও বিস্ফোরক করে তুলেছে। মার্কিনবিরোধী এই বিক্ষোভ এখন সরকারবিরোধী রূপ নিচ্ছে বলেই আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 3 =