মালদহে প্রাইমারি শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নাম করে এলাকার দুই বেকার যুবকের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নেওয়ার অভিযোগ

কুমার মাধব :: সংবাদ প্রবাহ :: মালদহ :: প্রাইমারি শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নাম করে এলাকার দুই বেকার যুবকের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল এলাকারই এক তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে। শাসকদলের নেতার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ওঠায় মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় তৈমুর রহমান শাসক দলের প্রভাবশালী নেতা তথা প্রাক্তন জেলা সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ডুমুরিয়া এলাকায়। তৈমুর রহমান এলাকারই কৃষ্ণ এবং বিষ্ণু মহালদার নামে ২ যুবকের কাছ থেকে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় সাত লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ। এই কাজে তার মদদ যুগিয়েছে ওই দুই যুবকের পাড়ার দুই মহিলা তৃণমূল কর্মী।

কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়াতে চাকরি না মেলায় টাকা ফেরত চাইতে গেলে ওই নেতার কাছ থেকে জুটছে প্রাণ-নাশের হুমকি। আরও জানা গেছে ওই দুই ভাই জেলা এবং রাজ্য স্তরের প্রসিদ্ধ দৌড়বিদ। বাবা মারা গেছে বহুদিন আগে।পরিবারের শেষ সম্বল ছিল একটি ছোট পুকুর। সেই পুকুর বিক্রি করে দুই ভাইয়ের চাকরির আশায় এলাকার দুই মহিলা তৃণমূল কর্মীর মাধ্যমে তৃণমূল নেতা তৈমুর রহমানের কাছে প্রায় সাত লাখ টাকা মত দিয়েছিলেন।

খেলা-ধুলায় সুনাম অর্জন করলেও বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিশ্রুতি মিলেছিল চাকরির। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না হয়ে বাধ্য হয়ে তারা এই প্রভাবশালী নেতা তৈমুর রহমানের খপ্পরে পড়ে বলে অভিযোগ।

এলাকারই দুই মহিলা নিভা মহরি এবং উৎপলা পাশওয়ান নামের দুই তৃণমূল কর্মীর মাধ্যমে এই দুই ভাইয়ের কাছ থেকে দফায় দফায় প্রায় ৭ লক্ষ টাকা আদায় করেন এই তৃণমূল নেতা।

টাকা দেওয়া দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও চাকরি মেলা তো দূর অস্ত উল্টে টাকা ফেরত চাইতে গেলে জোটে প্রাণ-নাশের হুমকি। যদিও ওই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-তৈমুর রহমান সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।

পাশাপাশি তৃণমূল মহিলা কর্মী নিভা মহরি এবং উৎপলা পাশওয়ান সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।প্রতারিতদের দাদার বক্তব্য উনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমার দুই ভাই যেহেতু খেলোয়াড় তাই সহজেই তাদের শিক্ষকতার চাকরি মিলবে না। সেখানেও অল্প টাকা দিতে হবে। কিন্তু বছর কেটে গেল চাকরির তো দুরস্ত তৈমুর রহমান আর আমাদের ফোন ধরেন না। দেখাও করেন না।

ওই দুই মহিলার মাধ্যমে টাকা চাইতে গেলে উল্টে প্রাণ-নাশের হুমকি দেয়। আমাদের শেষ সম্বল টুকু হারিয়ে গিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি ।

যদিও ওই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-তৈমুর রহমান সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন সামনে ভোট। আমার ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার জন্য এ ধরনের চক্রান্ত করছে এলাকার বিজেপির নেতারা। আমি ওই দুই ভাইকে চিনি না আর ওদের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সাও নেই নি।

এদিকে গোটা ঘটনায় ঘিরে তীব্র কটাক্ষ করেছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি সম্পাদক কিষান কেডিয়া জনান রাজ্য-জুড়ে তৃণমূল কাটমানি এবং দুর্নীতি রাজত্ব চালাচ্ছে। রাজ্য-জুড়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে তৃণমূলের নেতারা যেখানে সেখানে টাকা তুলে বেড়াচ্ছে।

গোটা ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতা তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। তিনি জানান দলের নাম ভাঙিয়ে কিছু লোক অসামাজিক কাজকর্ম করছে এগুলো কখনোই বরদাস্ত করা যাবে না।

আইন আইনের পথে চলবে। আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করব এই বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × four =