নিউজ ডেস্ক :: সংবাদ প্রবাহ :: কোলকাতা :: ‘কাজপাগল’ মানুষটা মৃত্যুর আগের দিনও হাসপাতালের কার্ডিওলজির কেবিনে বসে ফাইল দেখেছেন! বৃহস্পতিবার রাতে পিজি হাসপাতালে তখনও আচমকা পাওয়া শোকের ঘোর কাটেনি অর্ধশতকের রাজনীতিবিদের সমর্থক, অনুরাগী, বন্ধু, সহযোদ্ধা, ভালোবাসার মানুষদের।
কার্ডিওলজি বিভাগ থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে এই কথা জানালেন তাঁর বিশ্বস্তজনদের অন্যতম ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইসতিয়াক আহমেদ ওরফে ‘রাজু’। মোবাইলে হাসপাতালে দাদার ফাইল দেখার বিরল মুহূর্তের কিছু ছবি দেখাতে দেখাতে বললেন, ‘এই তো কালই দাদার সঙ্গে কার্ডিওলজির কেবিনে প্রায় ৪৫-৫০ মিনিট কথা হল। বললেন, ‘রাজু, বাড়ি ফিরলে মন্দিরে যাব। তোমাদের মাজারে গিয়েও শ্রদ্ধা জানিয়ে আসব।’
প্রয়াত পঞ্চায়েতমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রের খবর, আধিকারিকদের কাছ থেকে দপ্তরের জরুরি ফাইল আনিয়ে নিয়ে পিজি’র কেবিনে বসেই দেখতেন সুব্রত। এমনকী এবারের হাসপাতাল পর্বে একবার হার্ট ফেলিওর হওয়ার পর, বুকে দু’টি স্টেন্ট বসার পরও তাঁকে দমানো যায়নি। দপ্তরের জনস্বার্থবাহী বেশ কয়েকটি জরুরি ফাইল স্ক্রুটিনি করে, খতিয়ে দেখে তবে ছেড়েছেন তিনি। হ্যাঁ, কার্ডিওলজি কেবিনে থাকাকালীনই।
‘স্বজনহারানো’ রাজু বললেন, বুধবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ দাদার সঙ্গে দেখা করতে কেবিনে যাই। কত কথা হল। যথারীতি এলাকার খোঁজখবর নিলেন। বললাম, ‘দাদা, আমাদের বেশ কিছু পুজোয় আপনি তো ‘চিফ গেস্ট’। যাবেন কী করে?’ ওঁর ব্যক্তিগত সচিব স্বপন মহাপাত্রকে বললেন, ‘স্বপন, আমি তো যেতে পারব না। তুমি কিন্তু মনে করে যেও।’
রাজু আরও বলেন, হাসপাতালে ভর্তি থাকলে কী হবে, আমাদের গল্পের ৪৫-৫০ মিনিট একবারও মনে হয়নি, উনি অসুস্থ। চিরপরিচিত গলার স্বরে কোনও জড়তা ছিল না দাদার। আমাদের থেকে বেশি কেউ জানে না, কী হারালাম, কাকে হারালাম! মেয়র, পোটেম স্পিকার, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী, পঞ্চায়েতমন্ত্রী সহ একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
ছবি ও সংবাদ সৌজন্য :: বর্তমান পত্রিকা