মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে আসানসোলে বাবার মৃত্যুদন্ড !!

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: আসানসোল :: বুধবার ৬,আগস্ট :: মাত্র ১৫ মাসের মধ্যে বিচার করে আসানসোল আদালতে ১৪ বছরের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুনে দোষী সাব্যস্ত বাবার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এই মামলার সরকারি আইনজীবীর দাবি, এই প্রথম আসানসোল আদালতে দোষী সাব্যস্ত কোনও আসামির মৃত্যুদণ্ডের সাজা হল। তাও আবার মাত্র ১ বছর ৩ মাসের মধ্যে।

ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২৪ সালের ১২ মে। অন্যান্য দিনের মতোই সেদিন রাতেও বার্নপুরের বাসিন্দা ওই নাবালিকা তার মা, বাবা ও ভাইবোনের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল।

কিন্তু পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মা দেখেন মেয়ের মুখ পর্যন্ত চাদরে ঢাকা। সন্দেহ হতেই চাদর সরিয়ে দেখেন নিথর হয়ে পড়ে রয়েছে মেয়ে। এরপর বিষয়টি নিজের স্বামীকে বলেন।

তাঁর স্বামী জানিয়ে দেন এ ব্যাপারে পুলিশ বা কাউকে বলার দরকার নেই। কিন্তু তাতে রাজি হননি নাবালিকার মা। এরপরই তিনি চিৎকার করে সবাইকে ডাকেন। এমনকি পেশায় টোটোচালক হওয়া সত্ত্বেও ওই নাবালিকার বাবা নিজের মেয়েকে টোটোতে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাননি।

এরপর নাবালিকার মা অন্য একজনের টোটোতে করে মেয়েকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা ওই নাবালিকাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, নাবালিকাকে গলায় দড়ি জাতীয় কিছু চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।

গত সোমবার স্পেশাল পকসো কোর্টের বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় তদন্তকারী অফিসারের দেওয়ার তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ও সওয়াল-জবাব শেষে নির্যাতিতার বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন।

আর এদিন সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক দোষী সাব্যস্তর বিরুদ্ধে পকসো আইনের ৬ নং ও আইপিসির ৩০২ নং ধারায় ফাঁসির নির্দেশ দেন।

সেই সঙ্গে আইপিসির ২০১ নং ধারায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশও দিয়েছেন। এছাড়াও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দেন বিচারক। এই জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

বিচারক আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে, রাজ্য সরকারকে ভিকটিম কমপেনসেশান ফান্ড থেকে মৃতার মাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এই মামলায় মৃতার মা, বেশ কয়েকজন আত্মীয়, হাসপাতালের চিকিৎসক, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ সহ মোট ১৬ জন সাক্ষী দিয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − one =