নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ : দীঘা :: মৌসুম শুরু হলেও দেখা নেই ইলিশের। কিছুটা হলেও হতাশ মৎস্যজীবী থেকে ট্রলার মালিকরা। তার মাঝেও একমাত্র ট্রলার মালিক লাখোপতি। রবিবার বিকালে মৎস্যজীবি জালে উঠে আসা বিশালাকৃতির ভোলা মাছ জন্য নিয়ে আসেন। মাছটির ওজন প্রায় ৫৫ কেজিরও বেশি।
দীর্ঘক্ষন নিলামে পর মাছটি ১৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কিনে নেয় এসএফটি সংস্থা। বড়মাপের ভোলা মাছটিকে দেখতে আড়তে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। জানাজানি হতেই সৈকত নগরীর দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা ছুটে আসেন। অনেকে আবার নিজের ক্যামেরাবন্দিও করেন।
জানাগেছে, প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে নিলাম পর্ব চলার পর ২৬ হাজার প্রতি কিলো দরে মোট ১৩ লক্ষ টাকায় মাছটি কিনে নেয় এসএফটি সংস্থা। জানা গেছে এই মাছটি শঙ্কর প্রজাতির তেলিয়া ভোলা। মজা হচ্ছে স্ত্রী, পুরুষ ছাড়াও উভ লিঙ্গেরও হয়ে থাকে এই প্রজাতির ভোলা। আর এই উভয় লিঙ্গের তেলিয়ার স্থানীয় নাম খচ্চর ভোলা।
এই ধরনের ভোলার পেটে থাকা অন্ত্র বা পটকা দীর্ঘতম হওয়ায় অত্যন্ত মূল্যবান এই মাছ। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মাছের এই অন্ত্র ওষুধের ক্যাপসুল তৈরির কাজে লাগে। সহজে দ্রবীভূত হওয়ায় বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানির তরফে কিনে নেওয়া হয়।
তবে অন্যান্য ভোলার মতই খচ্চর ভোলারও স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছের পটকা দীর্ঘ হওয়ায় পুরুষ মাছের কেজি প্রতি দাম বেশি হয়্। এদিনের ১৩ লাখি ভোলাটি অবশ্য স্ত্রী ছিল। পুরুষ মাছ হলে এই ওজনের মাছের দাম ২০ লাখ অবধি হতে পারত বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা থেকে ব্যাবসায়ীরা।
দিঘায় মাছটি নিলাম হলেও মাছটি নিয়ে এসেছিলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার নৈনানের বাসিন্দা শিবাজী কবির। মোট ওজন ছিল ৫৫ কেজি। নিলামের নিয়ম অনুযায়ী মোট ওজনের ৫ শতাংশ বাদ দিয়ে এবং ডিমের জন্য ৫ কেজি বাদ দিয়ে মাছটির মোট ওজন দাঁড়ায় ৫০ কেজি।
দিঘা মোহনার আড়তদার কার্তিক বেরা বলেন ” এই মাছটি স্ত্রী ছিল। পেটে ডিম থাকায় পটকার পরিমাণ খানিকটা কম “।
দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কার্যকর্তা ও স্থানীয় আড়তদার নবকুমার পয়ড়্যা বলেন ” গত ২ বছরে ইলিশ ওঠেনি তেমন করে, কিন্তু মাঝেমধ্যে এই তেলিয়া ভোলা উঠে বাজারের অভাব কিছুটা হলেও মিটিয়ে ছিল। ওই দু’বছর কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা দিয়েছিল এই মাছ।
এবার এখনও অবধি ইলিশে ঘাটতি রয়েছে এবছর । এখন দেখা যাক এই মরসুমেও ভালো পরিমান তেলিয়া ভোলা ওঠে কিনা। তবে এই শঙ্কর প্রজাতির মাছটি বছরে সাধারণত ২-৪ টা ওঠে। যার জালে জড়ায় তারই কপাল খুলে যায় “।