সংবাদ প্রবাহ নিউজ ব্যুরো :: নয়াদিল্লি :: পদ্ম পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার এক অভিনব সংবর্ধনা দেখল রাষ্ট্রপতি ভবন। কর্ণাটকের রূপান্তরকামি মঞ্জম্মা জোগাঠি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কার নেয়ার আগে তার নজর ওঠালেন মঞ্জম্মা। যাতে কোনো কুদৃষ্টি না পড়ে তার জন্য যেভাবে রাষ্ট্রপতির সামনে গিয়ে বাঁ হাতে তিনবার ঘোরালেন তাতে ঘাবড়ে যান কোবিন্দও। পরে হেসে মঞ্জম্মা বুঝিয়ে দেন, রাষ্ট্রপতির যাতে কোনো অনিষ্ট নাহয় তার জন্যই এই রীতি পালন।
এদিন চিরাচরিত দক্ষিণী কায়দায় শাড়ি পরে পদ্মসম্মান নিতে আসেন মঞ্জম্মা। কথায় আছে, বৃহন্নলাদের আশীর্বাদে সৌভাগ্য প্রাপ্তি হয়। বৃহন্নলা মঞ্জম্মা তাই রাষ্ট্রপতিকে একপ্রকার আশীর্বাদই করেছেন। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই প্রথমে চমকে গেলেও পরে অভিবাদন জানান মঞ্জম্মার এই কাজে।
মঞ্জম্মার আসল নাম মঞ্জুনাথ শেট্টি। বল্লারি জেলার বাসিন্দা মঞ্জু দশম শ্রেণির বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি ১৫ বছর বয়সে নিজের মধ্যে নারীত্বের আভাস বুঝতে পারে কিশোর মঞ্জু। তারপর মেয়েলি স্বভাবের জন্য তার মা-বাবা তাকে হসপেটের একটি মন্দিরে নিয়ে গিয়ে জোগাপ্পা রীতি পালন করেন। এই রীতিতে ভক্তদের ঈশ্বরের সাথে বিবাহ দেয়া হয়। তারপর থেকে মঞ্জুনাথ হয়ে যান মঞ্জম্মা জোগাঠি। আর কোনোদিন বাড়ি ফেরেননি তিনি।
পেটের দায়ে শাড়ি পরে রাস্তায় ভিক্ষাবৃত্তি করতেন মঞ্জম্মা। বেশ কয়েকবার যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে একসময় আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু একজন বাবা ও তার ছেলের সংস্পর্শে আসেন তিনি। তাদের কাছে নাচ শিখে নতুন জীবন শুরু করেন মঞ্জম্মা। কল্লাভা জোগাঠির সংস্পর্শে এসে মঞ্জম্মা জোগাঠি নৃত্য শেখেন। তারপর রাজ্যজুড়ে নৃত্যপ্রদর্শনী শুরু করেন। গুরু কল্লাভার মৃত্যুর পর নৃত্যগোষ্ঠীর ভার নিজের কাঁধে নিয়ে তিনি বিভিন্ন জায়গায় শো করতে থাকেন। এরপর মঞ্জম্মা প্রথম রূপান্তরকাম হিসাবে কর্ণাটকের জনপদ অ্যাকাডেমির সভানেত্রী নির্বাচিত হন। কর্ণাটকের কলা-সংস্কৃতির সরকারি প্রতিষ্ঠান এই অ্যাকাডেমি।