নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: বাঁকুড়া :: রাঢ় বঙ্গে আদিবাসী জনজাতির চিরাচরিত শিকার উৎসব শুরু হয়েছে। সাধারণভাবে মার্চের শেষ থেকে শুরু হয় আদিবাসীদের শিকার উৎসব, যা চলে আগামী জুন মাস পর্যন্ত। নিরীহ বন্যপ্রাণীদের হত্যা রুখতে আদিবাসী সমাজের ‘শিকার উৎসবে’ রাশ টানতে চাইছে বনদপ্তর।
বিশেষ সূত্রে খবর, আগামী ১২ বৈশাখ বাঁকুড়ার শিবডাঙ্গা-বিবড়দা-তালডাংরার জ্বালার জঙ্গল দিয়ে এবছর শিকার উৎসব শুরু। পরে বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে ১১ তম শিকার উৎসব দিয়ে এবছর এই প্রথার শেষ হবে।
এই শিকার উৎসব গুলিতে অংশ নেবেন বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়ার আদিবাসী সমাজের মানুষ। এই অবস্থায় বণ্যপ্রাণ রক্ষায় ‘শিকার উৎসব’ বন্ধ রাখার আবেদন জানালেন পাঞ্চেত বনবিভাগের বিভাগীয় আধিকারিক সত্যজিৎ রায়।
বনদপ্তরের বক্তব্য মানতে নারাজ আদিবাসী সমাজের মানুষ। তাদের মতে, শিকার উৎসব মানেই বণ্যপ্রাণ হত্যা নয়। ভারত জাকাত মাঝি পারগনা মহলের বাঁকুড়া জেলা সহ সভাপতি শ্যাম মাণ্ডি বলেন, চিরাচরিত এই প্রথাকে সাঁওতালী ভাষায় ‘সেন্দড়া’ বলা হয়। যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘সংগ্রহ করা’।
আগেকার দিনে যখন চিকিৎসা ব্যবস্থা এতো উন্নত ছিলনা তখন বছরের বিশেষ দিনে আদিবাসী সমাজের মানুষ জঙ্গল থেকে ভেষজ ওষুধের গাছ গাছালি সংগ্রহ করে আনতেন। সেই থেকেই এই প্রথা চলে আসছে।
এই ইস্যুতে আদিবাসী সমাজের পাশে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। সংগঠনের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক জয়দেব চন্দ্র বলেন, জঙ্গল থেকে শুরু করে জঙ্গলের পশু পাখি রক্ষা করছেন ওঁরাই। বনদেবতার পূজো ওরা আদিম কাল থেকে করে আসছেন। যে সব পশু পাখি ওঁরা শিকার করেননা সেসব হারিয়ে যাচ্ছে কি করে?