নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: নয়াদিল্লি ডেস্ক :: বৃহস্পতিবার ১৬,অক্টোবর :: রুশ তেল আমদানি নিয়ে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক শুরু হলেও, ভারত সরকার জানিয়েছে— দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও সাধারণ গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষাই কেন্দ্রের প্রধান অগ্রাধিকার।
সম্প্রতি এক নির্বাচনী জনসভায় ট্রাম্প অভিযোগ করেন, “ভারত ও চীন রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ তেল কিনে পশ্চিমা বিশ্বের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত উপেক্ষা করছে।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে কূটনৈতিক মহলে হইচই পড়ে যায়।এই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র রণদীপ সিং জয়সওয়াল এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “ভারত সবসময়ই নিজের জাতীয় স্বার্থকে সর্বাগ্রে রেখেই সিদ্ধান্ত নেয়। জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে আমাদের নীতি পরিষ্কার— যে দেশ থেকে সাশ্রয়ী দামে তেল পাওয়া সম্ভব, সেখান থেকেই আমদানি করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ব জ্বালানি বাজার বর্তমানে অত্যন্ত অস্থির। তাই ভারতীয় গ্রাহকদের জন্য স্থিতিশীল সরবরাহ ও ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করাই সরকারের দায়িত্ব। সেই লক্ষ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধের পর পশ্চিমা দেশগুলির নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেল কম দামে পাওয়া যাচ্ছে, যা ভারতের আমদানি খরচ কমাতে এবং দেশের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করেছে।
সরকারি সূত্রের দাবি, বর্তমানে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় ৩৫ শতাংশই রাশিয়া থেকে আসে। ফলে রুশ তেলের উপর নির্ভরতা বাড়লেও, এর ফলে দেশীয় বাজারে জ্বালানির দাম কিছুটা স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে।
বিরোধী শিবির যেখানে ট্রাম্পের মন্তব্যকে আন্তর্জাতিক চাপে নতিস্বীকারের ইঙ্গিত বলে দাবি করছে, সেখানে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট— “ভারতের সিদ্ধান্ত ভারতের জনগণের জন্য, কোনো বিদেশি চাপ নয়।”
কূটনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, মার্কিন নির্বাচনের প্রাক্কালে ট্রাম্পের এই মন্তব্য মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে ভারত তার অবস্থান থেকে সরছে না— দেশের স্বার্থই প্রথম ও শেষ কথা।