লালু কন্যা রোহিনী আচার্যর রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা, পরিবার থেকেও দূরত্ব

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: পাটনা, :: শনিবার ১৫,নভেম্বর :: বিহার রাজনীতির আলোচিত মুখ এবং আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদবের কনিষ্ঠ কন্যা রোহিনী আচার্য হঠাৎ করেই রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা করেছেন।

একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পারিবারিক রাজনীতির দ্বন্দ্ব ও ব্যক্তিগত কারণবশত তিনি পরিবার থেকেও নিজেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছেন। এই সিদ্ধান্ত এসেছে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডির হতাশাজনক পরাজয়ের পর, যা দলীয় শিবিরে নতুন করে আলোড়ন তুলেছে।

রোহিনী সামাজিক মাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানান, “আমি এখন থেকে রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে দাঁড়াচ্ছি। নিজের সম্মান ও মানসিক শান্তির জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোনও রাজনৈতিক পদ, দায়িত্ব বা ভূমিকার প্রতি আমার আর কোনও আগ্রহ নেই।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ তাঁকে গভীরভাবে আহত করেছে এবং পরিবার ও দলের উভয় জায়গাতেই তাঁর অবস্থান ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছিল।পারিবারিক দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দিতে গিয়ে রোহিনী দাবি করেন, পরিবারের অভ্যন্তরে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা সৃষ্টি হচ্ছিল। তিনি জানান, তাঁর মতামত ও অবস্থানকে উপেক্ষা করা হচ্ছিল বারবার।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রোহিনীর এই ঘোষণা লালু পরিবারের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতাকে আবারও সামনে নিয়ে এল। বিহারের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে লালু পরিবার বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু—সেই পরিবারের এক সদস্যের প্রকাশ্য দূরত্ব দলীয় নেতৃত্বের জন্য নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

আরজেডি শিবিরে এই ঘোষণার পর থেকেই নীরব প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। যদিও দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্য করা হয়নি, দলীয় একাধিক নেতা এটিকে “দুঃখজনক” ও “ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর” বলে আখ্যা দিয়েছেন অনানুষ্ঠানিক আলোচনায়।

রোহিনী আচার্য এর আগে প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, তিনি কোনও নির্বাচনে অংশ নিতে চান না এবং কোনও সাংবিধানিক পদও তাঁর লক্ষ্য নয়। লালু যাদবকে কিডনি দানের মতো মানবিক কারণেই তিনি কয়েক বছর আগে আলোচনায় আসেন। কিন্তু পারিবারিক ও রাজনৈতিক চাপের মধ্যে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অস্বস্তিতে ছিলেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলের ধারণা।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই সিদ্ধান্ত আরজেডির ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষত পরিবারকেন্দ্রিক নেতৃত্ব কাঠামোর উপর চাপ বাড়াবে এবং বিরোধীদের হাতেও এটি দলীয় অস্থিরতার নতুন বিষয় হিসেবে ব্যবহার হতে পারে।

রোহিনীর এই সিদ্ধান্তে লালু পরিবারের রাজনৈতিক অধ্যায়ে নতুন মোড় যোগ হলো বলেই মনে করছেন অনেকে। তিনি ভবিষ্যতে জনজীবন থেকে সম্পূর্ণ সরে দাঁড়াবেন কি না—তা এখন নজর রাখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − 1 =