উদয় ঘোষ :: সংবাদ প্রবাহ :: বর্ধমান :: পৌষ সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানোর চল রয়েছে বর্ধমান শহরে। শুক্রবার থেকে তিনদিন শহর জুড়ে চলে ঘুড়ির মেলা। দামোদরের চরে, বাহির সর্বমঙ্গলা পাড়ায় ঘুড়ির মেলা হয়। কিন্তু, কোভিড পরিস্থিতির জন্য মেলা বন্ধ হয়েছে। তার উপর কোভিড গ্রাফ বৃদ্ধির কারণে দোকান বন্ধ থাকছে। সব মিলিয়ে ঘুড়ি বিক্রির বাজার ‘ভোকাট্টা’ বলেই জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
অন্যান্য জায়গায় বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ানোর চল থাকলেও শহর বর্ধমানে বিশ্বকর্মা পুজোয় ঘুড়ি ওড়ে না।পৌষ মাসের সংক্রান্তি ও মাঘ মাসের প্রথম দিন বর্ধমান শহরের বিভিন্ন জায়গায় হয় ঘুড়ি উৎসব বা ঘুড়ির মেলা।রাজার আমল থেকেই এই রেওয়াজ চলে আসছে আজও। সারা রাজ্যে যখন বিশ্বকর্মা পুজোতে ঘুড়ি ওড়ায় তখন বর্ধমান ঘুড়ি নিয়ে মেতে ওঠে মকর সংক্রান্তিতে।কথিত আছে, রাজ আমলে বর্ধমান রাজবাড়িতেও ঘুড়ি ওড়ানোর চল ছিল। রাজা মহতাবচাঁদ নাকি নিজেই ঘুড়ি ওড়াতেন। বর্ধমানের রাজারা এসেছিলেন পঞ্জাব প্রদেশ থেকে। সেখানে ঘুড়ি উৎসব বেশ জনপ্রিয়। বর্ধমানের রাজাদের হাত ধরেই বর্ধমানে ঘুড়ি উৎসবের চল বলে মনে করা হয়।
এবারের কোভিড পরিস্থিতিতে ঘুড়ির মেলার সেই জাঁকজমক নেই। মাঘ মাসের প্রথম দিন দামোদরের চরে মাঘী মেলা হয়। সেখানে ঘুড়ি ওড়ে ব্যাপক। সংক্রান্তির দিনেও শহরের একাংশে ঘুড়ির মেলা হয়। মাঘ মাসের দ্বিতীয় দিনেও ঘুড়ি উড়ানো চলে। ছাদে ছাদে পিকনিকের মেজাজে ঘুড়ি ওড়ানোর ছবি দেখা যায়। এবার সেই মেজাজে ভাটা। কারণ হিসাবে কোভিডকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।
শহরের বড়বাজার, রাজবাটী, রাজগঞ্জ, তেঁতুলতলা বাজারের ঘুড়ির ব্যবসায়ীদের দাবী, কোভিডের কারণে ঘুড়ির মেলা বন্ধ। তারপর জেলা প্রশাসন সপ্তাহে বৃহস্পতি ও রবিবার দোকান বন্ধের নির্দেশিকা জারি করেছেন। তাই এবার ঘুড়ির কম বিক্রি বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বড়বাজারের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সনাতন দত্ত, রথতলার সেখ সানি বলেন, শুক্রবার ঘুড়ির মেলা। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দোকান বন্ধ। তাহলে বিক্রি হবে কিভাবে। আবার রবিবার শহরের একাংশে ঘুড়ির মেলা। ওইদিন ছুটি। তাই ওইদিন ঘুড়ির বাজার জমত বলেই মনে করছিলাম। কিন্তু, রবিবারও বাজার বন্ধ থাকবে। ফলে আমাদের বাজার এবার মাঠে মারা গেল।