নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: সুন্দরবন :: সোমবার ০৪,ডিসেম্বর :: সুন্দরবনের প্রায় সর্বত্রই গোলপাতা জন্মে থাকে। তবে নদী ও খাল ধারে অধিক পরিমাণে দেখা যায়। সুন্দরবনে ছোট বড় মিলে প্রায় ৪৫০ এর মতো নদী ও খাল জালের ন্যায় বিন্যস্ত আছে। আর গোলপাতা গাছও এসব স্থানের নদী-খাল ও চড়াতে বিক্ষিপ্তরূপে শোভা পাচ্ছে। গোলপাতা সুন্দরবনের একটি সম্ভাবনাময় ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ প্রজাতি। এটি সুন্দরবনের একটি অতি মূল্যবান প্রাকৃতিক অর্থকরী সম্পদ।
গোলপাতা সুন্দরবন সংলগ্ন ও এর আশপাশে সকলেরই একটি অতি পরিচিত নাম। এটি পামের একমাত্র প্রজাতি যা ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে মেলে। সুন্দরবন বিষয়ে গবেষক অনিবেশ মন্ডল বলেন, সুন্দরবনের স্বল্প ও মধ্যম লবণাক্ত অঞ্চলে জন্মে। এর পাতা প্রায় ৩-৯ মিটার লম্বা হয়। দেখতে এটি নারকেল পাতার সাদৃশ্য। কিন্তু নারিকেল পাতার চেয়ে এটা মজবুত এবং স্বল্প সময়ে এটি পচন ধরে না।
স্থানীয় অধিবাসীদের ঘরের চালায় ছাউনি হিসেবে এটি ব্যপক চাহিদা রয়েছে। অদূর অতীতে স্থানীয় অধিকাংশ ঘরের চালায় এ গোলপাতার ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে। টিনের চালার বিপ্লবের যুগে বর্তমানে এর চাহিদা ততটা দেখা যায়ন। সুন্দরবনের পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার টাকি মিনি সুন্দরবনের গেলে অসংখ্য গোলপাতা গাছ সহ গোলপাতা ফল দেখতে পাবেন। তবে এর ফল ঠিক তাল বা নারকেলের মত ভিতরে জল ও শাস সবই আছে।
স্থানীয় মানুষের কাছে এই ফলের ভিতরে শাস খুবই প্রিয়। তবে এর আর একটি বৈশিষ্ট ও গুনাবলি হচ্ছে এটি তালের মত কেটে রস ঝরানো যায় যা দিয়ে খেজুর ও তালের রসের মতই খাদ্যে ব্যবহার করা যায়। এমনকি এ রস দিয়ে বিভিন্ন মিষ্টি সামগ্রি সহ গুড় তৈরী করা যায়। উদ্ভিদবিদ রঞ্জিত মুখার্জি বলেন,সুন্দরবনের গোলপাতা গাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, একদিকে পরিবেশ দূষণ থেকে বাঁচাতে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন ত্যাগ করে।
পাশাপাশি জঙ্গলে বাঘ হরিণদের আত্মরক্ষার জায়গা এই গোলপাতা গাছ অপরিহার্য পাশাপাশি এর যে ফল গুণগতমান অত্যন্ত বেশি জঙ্গলে থাকা পশু পাখি থেকে শুরু করে কীটপতঙ্গরা এই ফলের রস খায়। অন্যদিকে বাস্তু তন্ত্র রক্ষা করার অত্যন্ত উপযোগী এই গোলপাতার গাছ এছাড়াও দৈনন্দিক ও সামাজিক জীবনে গোলপাতার ফল অত্যন্ত সুস্বাদু এবং এই ফলের রস খেজুরের রসের গুণগতমান থেকে অনেকটাই বেশি।