সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: জয়নগর :: মঙ্গলবার ৩১,ডিসেম্বর :: মিষ্টির সঙ্গেই বাঙালির পাতে বড়ো জায়গা করে নিয়েছে,এই জয়নগরের মোয়া।তবে এই মোয়ার জন্মস্থান নিয়ে বহুকাল ধরেই রয়েছে নানা বিতর্ক। মোয়া বলতেই বাঙালি বোঝে জয়নগর। কিন্তু সত্যিই কি তার উৎপত্তিস্থল সেখানে?
এর উত্তর পাওয়ার জন্য,জেনে নেওয়া প্রয়োজন জয়নগরের মোয়ার ইতিহাস!মোয়ার নামের আগে জয়নগরের নাম জড়িয়ে থাকলেও, এর আসল জন্মভূমি বহরু নামক গ্রাম। অর্থাৎ বলা যেতে পারে বহরু হলো, জয়নগরের মোয়ার আঁতুড়ঘর।
‘রায়মঙ্গল’ কাব্যে যে ‘বহরু’ নামের উল্লেখ লক্ষ্য করা যায়, তারই আজও বর্তমান নাম বহরু। এই গ্রামেই শৈশব কেটেছে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের।
গ্রামের জনৈক যামিনীবুড়ো এই মোয়ার জন্মদাতা হিসাবে পরিচিত।শোনা যায়, তিনি নিজের জমিতে কনকচূড় ধান ফলান। পরে সেই ধানের খই ও নলেন গুড় দিয়ে মোয়া তৈরি করে কোনও এক অনুষ্ঠানে তা পরিবেশন করেন।
সেই অনুষ্ঠানেই খোদ হাজির ছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। তিনি মোয়ার খুব সুখ্যাতি করেন। এরপরই লোকমুখে জনপ্রিয়তা লাভ করে বহরু ওরফে জয়নগরের মোয়া।
সুখ্যাতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই মোয়ার চাহিদা বাড়তে থাকে। ফলে মোয়া প্রস্তুতকারকদের ব্যবসায়িক উন্নতি ঘটতে থাকে।যামিনীবাবুর মোয়ায় খই ও নলেন গুড় ব্যতিত আর বিশেষ কিছু ছিলো না।
এই মোয়াকেই পরবর্তীকালে নতুন রূপে ও স্বাদে প্রস্তুত করেন জনৈক পূর্ণচন্দ্র ঘোষ (বুঁচকি বাবু) ও নিত্যগোপাল সরকার। ১৯২৯ সালে তাঁরা বহুড়ুতে একটি মোয়া তৈরির দোকান স্থাপন করেন। এইভাবেই যাত্রা শুরু হয় বীণাপাণি মিষ্টান্ন ভান্ডার ও শ্যামসুন্দর মিষ্টান্ন ভান্ডারের ।
অধিকর্তা গণেশ দাস ও বাবলু ঘোষ বলেন , সেইসময় প্রাচীন জনপদ বহুড়ুতে কোনও বাজার ছিলনা। কাজেই মোয়া প্রস্তুতকারকদের তা বিক্রি করতে যেতে হতো জয়নগর হাটে।এর ফলেই,ক্রেতাদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে বহুড়ুর পরিবর্তে জয়নগরের মোয়ার নাম। শীতের শুরুতে জমে উঠেছে জয়নগরের বহুড়ুতে মোয়ার বাজার